শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭

কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতিঃসরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রকাশ

কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতিঃসরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রকাশ

 

অতি সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হেফাজতের নেতা শফি সাহেবের সাথে এক বৈঠকে কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দানের ঘোষণা দিহেছেন।এতে সরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রকাশ পেয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ এবং এটি বাস্তবায়িত হলে সরকারই লাভবান হবে বলে মনে  হয়।অন্যদিকে জামাতে ইসলানী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

  রাজনীতির মাঠে  জামাতে ইসলামীর সাথে হেফাজতের বিশাল দূরত্ব রয়েছ।জামাতের নীতিনির্ধারী পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা প্রথাগত মাদ্রাসা শিক্ষিত নয়কওমি মাদ্রাসার মুহাদ্দেসগন এদেরকে যথার্থ ইসলামী নের্তৃত্ব বলে মনে করেন না।ফলে এরা মননে জামাতের বিরোধি পক্ষ।সসরাচর হেফাজতের ছাত্র সংগঠন সরকার বিরোধি আন্দোলনে যুক্ত হয়না।তারা দ্বীনের খেদমতে থাকেন।বিভিন্ন মসজিদ, মক্তব আর কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতায় যুক্ত থাকেন।তাদের সনদের স্বীকৃতি না থাকায় সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ ছিলনা।কেউ কেউ সরকার স্বীকৃত মাদ্রাসায় পুনরায় পড়ে সরকারি চাকুরি করছেন।এদের মধ্যে বেশির ভাগই জামাতের রাজনীতির সাথে যুক্ত।কারো কারো সার্টিফিকেটও ভুয়া। অন্যদিকে মাদ্রাসা পড়ুয়া  যারা অনিবার্যভাবে সরকারি চাকুরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তাদের সিংহভাগ জামাতের রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।কেউ কেউ এখনো এয়ানত প্রদান করেন।এই বিষোয়টি নিশ্চয় বর্তমান সরকার জ্ঞাত আছেন।এমতাবস্থায় যদি বিকল্প প্রার্থী না পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে জামাতের অংশীদারিত্ব বাড়বে।এটি নিশ্চিত।সরকার সম্ভাব্য সংকট মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
   এদিকে সরকার উপজেলা পর্যায়ে সরকারি মসজিদ প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিচ্ছেন।এখানে জামাতের কর্মীদের নিয়োগ রোধকল্পে এমন পদক্ষেপ নেয়া জুরুরী ছিল।
  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ধর্মীয় প্রশিক্ষক বা ইমাম হিসেবে যারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন তাদের অতীত তালাশ করলে দেখা যাবেঃতাদের অনেকেই ছাত্র জীবনে সরাসরি জামাতের রাজনীতির অনুসারি ছিলেন।ভবিষ্যতে এদের বিষয়েও সরকার হয়তো কোন সিদ্ধান্ত নিবেন।
   স্বধীনতা যুদ্ধে কওমি মাদ্রাসার হুজুরদের রাজাকার বাহিনীতে অংশগ্রহনের নজির খুব একটা নেই। এটাও বিবেচনার বিষয় হতে পারে ।সাথে সাথে রাজনীতির মাঠে সরকার ধর্মীয় নেতাদের একটা অংশের সমর্থনের আশাও করছেন এবং এটি সহজেই পাবেন বলে আশা করা যায়।কারণ,কওমি মাদ্রাসাসমূহ ভারতের দেওবন্দ উলুমের অনুসারি এবং তারা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহনকারি।ভারতের সাথে সুসম্পর্কের কারণে সরকার এদের সমর্থন পাবেন।
 সর্বোপরি, কওমি মাদ্রাসাকে  শিক্ষার মূল ধারায় আনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হচ্ছে এটি।আশাকরি সরকার শিক্ষার্থীদের একটা বিশাল  অংশকে জবাবদিহিতার মাঝে আনতে সমর্থ হবেন।
                                                                               ----

    

Printfriendly

Featured Post

জাতি নির্মাণে গল্পযোগ

  জাতি নির্মাণে গল্পযোগ   ১ ।   মানুষ সামাজিক জীব।তারা পরিবার গঠন করে।তারপর সে-ই পরিবার একটি গোষ্ঠীতে রুপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে একাধিক গোষ...