শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

ইহুদী-মুসলিম সমাচার

 

ইহুদী-মুসলিম সমাচার

গতকাল জনৈক ভদ্রলোক বললেন,ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে বিশ্বের মুসলিম জাতি উত্তাল। প্রতি নামাজে প্রার্থনায় ইজরায়েল রাস্ট্রের জন্য অভিশাপের বাণী দিচ্ছে।অথচ ইজরায়েল ক্রমাগতভাবে ফিলিস্তিনকে মারছে, তাদের ভূমি দখল করছে,ধ্বংসের দ্বারপ্রান্থে নিয়ে যাচ্ছে।আল্লাহ মালিক চেয়ে আছেন। তিনি নির্মোহ। বিগত সত্তর বছর ধরে চলে আসছে রক্তের খেলা।কিন্তু সমাধানের দেখা নেই।আসুন আমরা কারণ তালাশ করি।আমরা বিষয়টি নিয়ে সংক্ষেপে খোলাখুলি আলোচনা করি।
১।ফেসবুক ওয়াজিনের অনেকে প্রতিটি ওয়াজে কখনো স্বপ্নের মাধ্যমে,কখনো বিভিন্ন সম্ভবনা আলোকে ইমাম মেহেদীর আগমনী সংবাদের আশ্বাস দিচ্ছেন।আর বেশিদিন নেই।আল আকসা মুসলমানদের দখলে যাবে।
২।আমাদের বাড়িতে বাড়িতে, ঘরে ঘরে ইহুদী ফিলিস্তিন সংকট। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ।একপক্ষ অবশ্যই অনিয়ম করে,জোর করে অন্যের জায়গা দখল করে।এদের না আছে পরকালের ভয়, না আছে আল্লাহর ভয়।তাহলে তারা কী করে ফিলিস্তিন সংকটে লাফ দিয়ে উঠে।আমরা নিজেরাই প্রথমে নায্যতার চর্চা করতে হবে।তবেই আল্লাহ আমাদের পক্ষে থাকবেন,আমাদেরকে বিজয়ী করবেন এবং আমাদের সত্যের সপক্ষে দাঁড়াবার শক্তি অর্জিত হবে।
৩।ইহুদিদের দুই হাজার বছরের স্বপ্ন ছিল, তারা ফিলিস্তিনে তাদের আবাস গড়ে তুলবে।তাদের স্বপ্ন সত্য হলো। তারা বলেন, ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা কবুল করেছেন।এজন্য পবিত্র ভূমিতে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
৪।আরব বিশ্ব ইসরাইলের বিরুদ্ধে তিনবার যুদ্ধ করে পরাজিত হয়েছে; আর প্রতিবার এদিকে সেদিকে ভূমি হারিয়ে মুক্তি খুঁজেছে।প্রায় সারা বছর খুনাখুনি লেগেই আছে।নিরিহ শিশু,নারী আর বৃদ্ধ প্রাণ হারায়, শহীদ হয়। মুসলমান জাতি হাহুতাশ করে,সাহায্য পাঠায়,ফিলিস্তিন সাহায্য নিয়ে খায়,নতুন প্রাসাদ তৈরি করে।
৫।ফিলিস্তিনে নির্বাচন হয়।ভাগ বাটোয়ারা করে ক্ষমতা পায়- হামাস আর আব্বাসের দল।এখানে হিসেব নিকেশ আছে।জয় পরাজয় আছে।এজন্য প্রয়োজন সময়মত রক্তের।এবারে নির্বাচন হওয়ার সময় এগিয়ে এসেছে।আব্বাসের প্রয়োজন নির্বাচন পেছানো ; কারণ, এতে তার পরাজয়ের সম্ভাবনা আছে।এতএব, তাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।কিভাবে? যেভাবে হবার সেভাবেই হলো।মাঝখানে আমরা হাহাকার করছি।এদিকে আব্বাস পরবর্তী ক্ষমতার আভাস পাচ্ছেন।এসকল মূল্যায়ন জেরুজালেম পোস্টের। আপনারা মিলিয়ে নিন।সাম্প্রতিক চলমান যুদ্ধে আব্বাসের ভূমিকা কী ছিল?
৬।কতো বছর এমনটা চলবে? মুসলিম বিশ্ব না আছে জ্ঞান সাধানায়, না আছে নৈতিকতা আর ন্যায্যতায়।তাদের অধিকাংশই বিলাসিতায় মগ্ন।তাহলে কি ফিলিস্তিনের মুসলিম এভাবেই শহীদ হবে?সমাধানের পথ কী?
মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ দেশই ইজরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি,দেবেনা এই শপথে ঐক্যমত্য আছে।আথচ কিছুদিন পরেই হয়তো ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের নাম স্বাধীন(!) রাস্ট্র তালিকা থেকেই মুছে যাবে।অর্থাৎ, পুরোটা ফিলিস্তিন ইজরেল দখলে নিয়ে যাবে।এদিকে মুসলিম বিশ্ব চিৎকার চেচামেচি করবে।কিছুই হবেনা।আমি মনে করি, মুসলিম বিশ্ব তাদের চিন্তাকে আর বিশ্বাসকে বিনির্মান করুক।তারা ইজরাইলকে একযোগে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করুক।ইজরাইল নিজেদের নিরাপদ ভাবতে থাকুক।পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্যের সংকট জিইয়ে রাখার সুযোগ আর পাওয়া উচিত নয়। তাহলে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা অন্তত বন্ধ হবে।মুসলিম বিশ্বের নেতারা পশ্চিমাদের দাবার ঘুটি হয়ে থাকা উচিত নয়।তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যতবারই যুদ্ধ করেছে,প্রতিবারই পশ্চিমাদের গোপন ইন্দনে প্রভাবিত হয়েছে।আর পরাজিত হয়েছে।
৭।মুসলিম বিশ্ব মূলতঃ কূটনীতির খেলায় একেবাই অদক্ষ।তারা অদক্ষ সম্পদের বন্টনে আর সাম্যতায়, তারা অদূরদর্শী শিক্ষা ও গবেষণা খাতে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে।
আমি মনে করি, এদিক দিয়ে বাংলাদেশ কিছুক্ষেত্রে অগ্রগামী।সাম্প্রতিককালে, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তে হট্টগোল হচ্ছে।আপনারা চিন্তা করুন, নির্যাতিত ফিলিস্তিনকেও ইজরায়েলের সাথে এক টেবিলে বসতে হয়,মিশরও বসে।এসবে অপরাধ নেই।সমাধান চাইলে বসতে হবে।
ক'দিন আগে আমার একজন প্রিয়ভাজন সারোয়ার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছে,দিনের শেষে আমরা ভালো সদাইটাই করি।তাই ইসরাইলের উৎপাদিত পন্য কেনা বন্ধ করার দাবী বা আবদার কেউ মানবেনা।কারণ, ইহুদীরা পন্য সকলের জন্য উৎপাদন করে,যা গুণে এবং মানে ভালো।এটিই বাস্তবতা।অতএব ব্যবসায় তারাই রাজত্ব করবে।আসুন,আমরা সেরা হওয়ার সাধনা করি, চেষ্টা করি।
এখন আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের রক্ত চাইনা,চাইনা নির্মম মৃত্যুর মিছিল।আমরা শান্তির পৃথিবী চাই।আল্লাহ কবুল করুন।
২৯/০৫/২০২১

প্রতিবাদের ভাষা

প্রতিবাদের ভাষা

     মানুষগুলো আর মানুষ নাই;সবাই মুখোশ পরে আছে।সব যেন এক একটা জানোয়ার।যতই হিদায়াতের বাণী শুনে, তাদের কোন পরিবর্তন হয়না।তাই, দীর্ঘ প্রায় আট দশক ধরে দরবেশ সাহেব জন্মদিনের পোশাকে থাকেন।তাঁর নাম কেউ জানেনা; শুধু এটুকু জানে যে তিনি খাড়া দরবেশ।বিগত শতাব্দীর শুরুতে তিনি বসুরহাট বাজারে থাকতেন।যাদের কিতাবের জ্ঞান আছে, তারা খাড়া দরবেশকে নিয়ে নিন্দাসূচক শব্দ বলতেন; তবে পেছনে। সামনে আসতেন না।তিনি কিভাবে জানি মানুষের গোমর ফাঁস করে দিতেন।উল্লিখিত দরবেশের দিগম্বর রুপ ছিলো প্রতিবাদের ভাষা।তিনি বলতেন পশু-পাখি-জানোয়ারের সামনে শরীর ঢাকার কোন দরকার নেই।তবে বছরে একবার এর ব্যতিক্রম হতো।জৌনপুরের পীর সাহেব অত্র এলাকা সফরে আসতেন। খাড়া দরবেশ কোন এক অজ্ঞাত উপায়ে তাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে যেতেন।তখন পথচারীদের উদ্দেশ্য বলতেন,"মানুষ আসছে,একখানা লুঙ্গি দাও।"
ইসলামের স্বর্ণযুগে জ্ঞানীগুণীদের আত্মমর্যাদাবোধ ছিলো ঈর্ষনীয়। তাঁদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এর প্রমান পাওয়া যায়।তখন বাগদের সিংহাসনে আসীন ছিলেন খলিফা মনসুর।তিনি কাজী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলেন।সে যুগের বিখ্যাত চারজন বিখ্যাত মনীষীকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করলেন।চারজন হলেন,ইমাম আবু হানিফা,সুফিয়ান সাওরী,শোরায়াহ ও ইমাম শা'বী। তারা চারজনই কাজীর পদ গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন।বিশেষ করে, তারা চলমান খিলাফত নামের রাজতন্ত্র মানতে পারেননি।দ্বিতীয়ত, রাসূল(সাঃ) -এর একটা হাদিস ছিলো, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে,যাকে কাজী নির্বাচিত করা হয়েছে তাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তাঁদের খলিফার দরবারে ডাকা হলো। তাঁরা একই সঙ্গে আসছিলেন।পথে ইমাম আযম বললেন,যেভাবেই হোক, আমি এই পদ গ্রহণ করবোনা।সুফিয়ানকে বললেন, আপনি সরে পড়ুন।শা'বী আপনি পাগলের ভান করুন। সুফিয়ান সরে পড়লেন।বাকি তিন জন দরবারে গেলেন।
খলিফা প্রথমে ইমাম আবু হানিফা(রাঃ) কে কাজীর পদ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করলেন।তিনি বললেন,আমি আরবের লোক নই।অতএব আরবের প্রধানগণ আমার হুকুম মানতে চাইবেনা।জাফর বারমাকী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।তিনি বললেন,গোত্রের সাথে পদের কী সম্পর্ক? এবার ইমাম বললেন,আমি এই পদের যোগ্য নই।এর প্রমান হলো,এই কথা হয় সত্য হবে,না হয় মিথ্যা হবে।সত্য হলে তো আমি এই পদের উপযুক্ত নই।আর যদি মিথ্যা হয়, তাহলে একজন মিথ্যাবাদীকে এরূপ দায়িত্বপূর্ণ পদের নিযুক্ত করা ঠিক নয়।এভাবে তিনি বাদ পড়লেন।
অতঃপর শা'বী এগিয়ে এসে খলিফার হাত ধরে বললেন,জনাব,আপনি কুশলে আছেন তো! আপনার পরিবার পরিজন কেমন আছে?খলিফা তার কথা বার্তার ধরন দেখে বুঝলেন,নিশ্চয় লোকটার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে।তিনি বাদ পড়লেন।
এবার শোরায়ার পালা।তিনি বললেন,আমি পাগল এবং আমার মস্তিষ্ক অত্যন্ত দূর্বল।আমার পক্ষে দায়িত্বপূর্ণ কাজ করা অসম্ভব। শুনে খলিফা বললেন, চিকিৎসা করলে রোগ সেরে যাবে। অবশেষে, তিনি উক্ত পদে নিযুক্ত হলেন।
২৫/০৯/২০২১

সরকারি চাকুরে এবং ব্যবসায়

 

সরকারি চাকুরে এবং ব্যবসায়

সরকারি চাকুরীজীবিদের ব্যবসায়ে জড়ানো নিষিদ্ধ ; একইভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাও তাদের উচিত নয়।সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মৌলিক কাজের অন্যতম হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা।কিন্তু সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান যদি আয়বর্ধক কাজে সরাসরি যুক্ত থাকে, তাহলে তাদের পেশাদারিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।পাকিস্থানের সেনাবাহিনী এর বড় প্রমাণ।তারা তাদের আর্থিক দুর্বিত্তায়নের ইচ্ছা পূর্ণ করতে গিয়ে পাকিস্থানের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে।তারা পাকিস্থানের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।ফলে তাদের পেশাদারিত্ব মান হারিয়েছে।যার ফল হচ্ছে, বার বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা।
বাংলাদেশেও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তাগণ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক উন্নতির উৎস হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ খুঁজে যাচ্ছে,কেউ কেউ ব্যবহার করছে।এক্ষেত্রে যাদের লাঠির জোর বেশি তারা এগিয়ে আছে।কিন্তু দেশের নিরাপত্তা,আইন-শৃংখলা এবং সেবাখাতের সরকারি ব্যক্তিগণ যদি লোভের ফাঁদে পা বাড়ায় তাহলে তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে;এ সত্য তাদের অনুধাবন করতে হবে।
সরকারি অফিস আদালতের বাইরে ভূমি ব্যবহার,এর উন্নয়ন এবং তদারকির জন্যও সরকারের প্রতিষ্ঠান আছে।যার যতটুকু করা যৌক্তিক তাকে শুধুমাত্র ততটুকু করবার সুযোগ দেয়া উচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি এবং সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্ধ কাম্য নয়।
টি আই বি’র রিপোর্টের সত্য মিথ্যা যাচাই না করেও আমরা ভুক্তভোগীরা বলতে পারি,সরকারি অফিসের মধ্যে বেশির ভাগ দুর্নীতিতে নিমজ্জ্বিত।অর্থাৎ এখানে বসে বসে তারা এক ধরনের ব্যবসায়িক কর্ম সম্পাদন করে যাচ্ছে।অথচ মনে রাখা উচিত, আমাদের কল্যাণের জন্য আমাদের সৎ হওয়া উচিত।০৩/১০/২০২১

আমার শিক্ষকগণ

 

আমার শিক্ষকগণ

বড়ই রাশভারী অধ্যাপক,আবু হামিদ লতিফ স্যার।প্রশ্ন করলেন,বাংলাদেশে শতকরা কতোজন শিক্ষিত।সহজ প্রশ্ন। কিন্তু কেউ কোন কথা বলছে না।আমি উত্তর দিলাম,শতভাগ। শতভাগ লোক শিক্ষিত।সবাই আমার দিকে তাকালো।স্যার বললেন,আপনি সঠিক বলেছেন।একজন মানুষ স্বাক্ষর না হয়েও শিক্ষিত হতে পারেন।স্যার,উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার উপরে একটা কোর্স করাতেন।আমার দেখা অসাধারণ শিক্ষক।
শিক্ষা অর্জন করার পেছনে সার্টিফিকেট ভিত্তিক শিক্ষাকে আমরা বিশেষ বিবেচনায় রেখে থাকি।কিন্তু আমাদের জীবনব্যাপী শিক্ষার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সামন্যই অবদান থাকে।আমি সাঁতার শিখেছিলাম, সমবয়সী ফিরোজের থেকে;সে কৈশোরে মারা যায়।পুরুষের স্পেশাল কিছু জিনিস আছে,তা শিখিয়েছিলো দিনমুজুর ওসমান।প্রায় সমবয়সী। এখন নেই।
ব্যক্তিজীবনে সমস্যা এবং সংকটের মুখোমুখি হয়ে আমরা মৌলিক শিক্ষা অর্জন করে থাকি।শেখ সাদী বলেছেন,বোকাদেরকে শেখাবার উপায় হচ্ছেঃএদেরকে ব্যস্ত রাখা;এদেরকে ব্যস্ত রাখলে বোকামি করার সময় পায়না।বেয়াদপদের শেখাবার উপায় হচ্ছেঃমারের উপর রাখা এবং বুদ্ধিমানদের শেখাবার উপায় হচ্ছেঃসমস্যার মুখোমুখি রাখা,এতে তারা সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য উদ্ভাবনী চিন্তার প্রয়োগ ঘটিয়ে থাকে।
আনুষ্ঠানিক শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে যাঁকে সবচেয়ে বেশি স্মরণে আছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন,বাবু ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার।ছ'ফুট উচ্চতার এই শিক্ষক আমাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াতেন।তাঁর শারীরিক উচ্চতার চেয়ে অধিকতর ছিলো মানবিক উচ্চতা।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকানোর কুড়ি বছর পরে তাঁর সাথে দ্বিতীয়বার দেখা করতে গিয়েছিলাম।ভালোলাগা যখন আত্মার সাথে একীভূত হয়ে যায়,তখন কেন ভালো লাগে তা শব্দে প্রকাশ করা যায় না।তবে পরবর্তী জীবনে এটুকু বুঝেছি যে,তিনি অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে আমাকেও গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
মাধ্যমিক স্তরে আমি ছিলাম গুরুত্বহীন অস্তিত্ব।পরিবারের কেউ জানতেও চাইতো না, কী পড়ছি, কেমন পড়ছি।শুধুমাত্র কর্মব্যস্ত মা,পাশে আসতেন।বলতেন,পড়।এটুকু মনে বাজতো। কারণ,আমরা ছিলাম মায়ের বাধ্য ছেলে।মাধ্যমিকেও আমরা স্বপ্ন দেখিনি;বড় হওয়ার স্বপ্ন।এটা কেউ না কেউ দেখাতে হয়,আমাদের কেউ দেখাবার প্রয়োজন বোধ করেনি।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পেলাম। অধ্যাপক মোমিন উল্যাহ স্যার।আমার দেখা সেরা শিক্ষক।শাসনে,বচনে এবং শিক্ষণ শিখনে তাঁর সাথে তুলনা করার মতো কেউ নেই।তিনি জীববিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন।কিন্তু প্রাইভেট পড়াতেন ইংরেজি।ইংরেজি শেখাবার সহজ কৌশল তিনি জানতেন এবং জানাতে সক্ষম ছিলেন।এখনও প্রতিটি মোনাজাতে তাঁর জন্য দোয়া করে থাকি।তাঁর কাছে আমার অশেষ ঋণ।
মানুষকে স্বপ্ন দেখানো শেখানো হচ্ছে সবচেয়ে বড় শিক্ষাদান।এতে শিক্ষার্থী নিজ থেকেই এগিয়ে যায়।আমাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাস্তরে এটি নেই বললেই চলে।কারণ,হতাশাগ্রস্ত শিক্ষক স্বপ্ন দেখাবার সাহস রাখেনা।এটা আমি বুঝেছি।
এম এ ভর্তির আগেও আমার কথা বলায় শুদ্ধ উচ্চারণের উপায় ছিলো না।খাস নোয়াখালীর ভাষায় অধিকাংশ শিক্ষক পাঠ দিতেন।প্রাথমিকে শতভাগ শিক্ষক নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় পাঠদান করতেন,মাধ্যমিকে এটি কমে আসে।কিন্তু পরবর্তীতে এসে দেখলাম,তাঁদের অধিকাংশই শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতেন না।এই ঘাটতি অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত থেকে যায়।আমাদের সন্মানিত আইন প্রণেতাদের সংসদের বিতর্ক শুনলে এটি বুঝতে পারবেন।আমারও উচ্চারণে ভুল ছিলো ভয়াবহ।আমার প্রতি সতীর্থদের করুণার দৃষ্টি দেখে ডঃনরেন বিশ্বাস স্যার বললেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সেরাদের অন্যতম মুনির চৌধুরী এবং মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী নোয়াখালীর মানুষ। সে শিখে নিবে।তারপরই উচ্চারণ শিখে নিই।সেটা ছিলো নীলখেত হাইস্কুলের করিডোরে।যতোদিন আমি কথা বলবো,ততদিনই নীলখেত স্কুলের করিডোর আর আলম খোরশেদকে মনে রাখতে হবে।
মানুষকে যে কতো ভালোভাবে ভালোবাসা যায় তা প্রত্যক্ষ করেছিলাম,জনাব পেয়ারা মিয়ার(মুজিবুর রহমান চৌধুরী) থেকে।যিনি দাগনভূঁইয়ার কৃতিসন্তান।তাঁকে দেখে মনে হয়েছে মানুষের কল্যাণ কামনা করা এক ধরনের নেশা।যেটি আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার।
বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমি সেই সকল শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি,যারা শিক্ষকতাকে উপভোগ করেন, যারা উপভোগ করেছিলেন, যারা স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান; চরম সংকটেও সত্যকে ধারণ করেন।০৬/১০/২০২১

একজন মানবিক ডাক্তারের খোঁজে

 

একজন মানবিক ডাক্তারের খোঁজে

মানবিক ডাক্তারের কাহিনী সিনেমায় সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়।সেখানে মূলতঃ নৈয়ায়িক কিংবা উচিত্যের বোধকেই রূপায়িত করা হয়।একজন ডাক্তার কেমন হওয়া উচিত তা-ই সিনেমায় দেখানো হয়।একজন মানবিক ডাক্তার বর্বর এবং বদমাশদের মন্দ আচরণেও সেবার মানসিকতা থেকে সরে যান না।ডাক্তারদের জীবনী নিয়ে বহু সিনেমা হয়েছে।সাম্প্রতিক কালের মুন্না ভাই এম বি বি এস সর্ব সাধারণের অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছে।তবে বাস্তব কাহিনী হিসেবে কেউ যদি জানতে চাহেন,তবে ইবনে সিনার জীবনের উপর নির্মিত সিনেমা The Physician দেখতে পারেন।মন ছুঁয়ে যাবে।আমরা আমাদের সন্নিহিত এলাকায় মানবিক ডাক্তারের অনুসন্ধান করে থাকি।খুব একটা পাওয়া যায়না।মানবিক ডাক্তার কারো কারো জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই কেউ চাইলেই মানবিক ডাক্তার হয়ে উঠতে পারেনা। শত প্রতিকূলতার মাঝেও অনেকেই নিজস্ব পরিমণ্ডলে মানবিকতার চর্চা করে থাকেন।কিন্তু চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর হাতে চলে যাওয়ায় অনেক মানবিক গুণের চিকিৎসকের জীবনাবেক সংকুচিত হয়ে গিয়েছে।আমরা দেখে থাকি,সরকারি হাসপাতালের বাইরে প্রাইভেট হাসপাতালে অনেক খ্যাতিমান চিকিৎসক রোগী দেখে থাকেন।সেখানে রোগী দেখার প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে,সিরিয়াল দেয়া।বহু রোগী আছেন,যারা আর্থিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত। এখানে বিত্তবান এবং বিত্তহীন সমান।রোগীর চেহারা দেখলেই বাস্তব অবস্থা বুঝা যায়।
আমি মনে করি, ডাক্তারকে অবশ্যই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়া উচিত।কিন্তু অপারেশন থিয়াটারে ঢুকবার আগে সমুদয় অর্থ পরিশোধর কঠিন শর্ত আরোপের বিষয়ে আরো নমনীয় হওয়ার সুযোগ আছে।
আমরা আমাদের মানবিক ডাক্তারদের জন্য শুভকামনা রাখছি।সামাজিক মাধ্যমে ফলাও করে মানবিক ডাক্তার সম্পর্কে বললে সমাজের নষ্টকীটগুলো তাঁদের পিছে লাগবে।তাই হাত গুটিয়ে নিচ্ছি।আমি আমার সন্নিহিত এলাকায় মাত্র একজন মানবিক ডাক্তারকেই চিনি।কিন্তু চিকিৎসার প্রয়োজনে অনেকের কাছে যেতে হয়েছে কিংবা হচ্ছে।দোয়া করছি,মানবিক ডাক্তারের রক্তের ধারা কিয়ামত পর্যন্ত যশ বহন করুক এবং তাদের হৃদয় সাগরের মতো বিশাল হোক।২২/১০/২০২২

উচ্চশিক্ষায় ভর্তিযুদ্ধ ও অভিভাবকদের অসহায়ত্ব

 

উচ্চশিক্ষায় ভর্তিযুদ্ধ ও অভিভাবকদের অসহায়ত্ব

উচ্চশিক্ষাস্তরে প্রারম্ভে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে প্রতি বছর শিক্ষক,শিক্ষার্থী,অভিভাবক এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপকদের অনিবার্য সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।চলতি বছর গুচ্ছ পরীক্ষা উক্ত সংকট নিরসনে আমাদেরকে আশাবাদী করেছিলো।কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে, শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং বাস্তবায়নে প্রত্যাশিত গবেষণা কিংবা আলোচনা করার সুযোগ হয়নি।ফলে জনমানসে বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।এ ক্ষেত্রে তুলনামূলক আলোচনার স্বার্থে কিছু বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করছি।
এ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী বাছাইয়ে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছে এবং কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক শিফটে পরীক্ষা নিয়েছে এবং অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।এতে তারা অধিকতর যোগ্য শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসবার সুযোগ দিয়েছে।তদ্রূপ, বুয়েট দু'ধাপে পরীক্ষার আয়োজন করলেও সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতায় আসবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।অন্যদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দু'শিফটে পরীক্ষা নিয়েও সাম্যতার স্বার্থে উভয় শিফট থেকে সমান সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ব্যর্থ হয়েছে।তারা দুই বা ততোধিক শিফটে পরীক্ষা নিয়েও আনুপাতিক সাম্যতা বজায় রাখেনি।কিন্তু আমরা জানি,প্রশ্নের ভিন্নতা নম্বর অর্জনেও ভিন্নতার কারণ হতে পারে।এতে করে যোগ্যদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথ সৃষ্টি করে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়েও মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই।এক্ষেত্রে প্রশ্নের মানের ভারসাম্য রক্ষা হয়নি বলে অনেকে মনে করেন।
এদিকে গুচ্ছ পরীক্ষার প্রভাবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অতীত ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।গুণগত মানে সেরা এবং দেশের অন্যতম প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয় এটি; শিক্ষার্থী বাছাইয়ে নম্বরের সীমায় বাধা পড়ায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদেরকে আশাহত করেছে।সাথে সাথে তারাও ভবিষ্যতের কৃষিবিদ,গবেষক কিংবা বিজ্ঞানীদের জন্মদায়িনী হওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে বলে আমার মনে হয়।এজন্য অধিকতর শিক্ষার্থী ভর্তি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া উচিত। এজন্য গত বছরের মতো নুন্যতম জিপিএ কিংবা তুলনীয় নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রবণতা এবং বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত।
শিক্ষার্থীদের প্রবণতাকে লক্ষ্য করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর যথাযথ কৌশল প্রণীত হওয়া উচিত ; একে ঐতিহ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সময়ের দাবি। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ নেভাল ইউনিভার্সিটি উদ্ভাবনী মমনের অধিকারী এক ছাত্রকে সরাসরি ভর্তির সুযোগ দিয়েছে; সাথে বৃত্তিরও ব্যবস্থা করেছে।আমাদের সমস্যাগ্রস্ত মূল্যায়ন পদ্ধতিকে ভিত্তি ধরে যদি আমরা এগুতে চাই, তবে আমরা পথ হারাবো।আমরা মেধাবী এবং প্রতিভাবান খোঁজবার জন্য আসর জমানোর আয়োজন করিনা;অথচ পৃথিবীর বহু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর গণিতের জ্ঞানকেই কয়েকটি বিষয়ের ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে।
পরিশেষে, ভর্তিযুদ্ধ এমনতর যৌক্তিক পথে অগ্রসর হোক, যাতে করে অভিভাবকদের রক্তক্ষরণ না হয়।এমনভাবে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে যাতে সকলেই ভর্তিপরীক্ষার পদ্ধতি এবং কৌশল নিয়ে গর্ব করবে।আমরা সে দিনটির প্রতীক্ষায় আছি।০৬.১১.২০২১

সমাজ ব্যবস্থায় বাস্তবতা

 

সমাজ ব্যবস্থায় বাস্তবতা

এই দুনিয়া এক বিচিত্র স্থান।এখানে ভালো মন্দ একটা আপেক্ষিক বিষয়। ভালো মন্দের নির্ণায়ক সমাজের ক্ষমতাসীন ব্যক্তি বৃন্দ। তারা তাদের সুবিধামত বিবেচনাশক্তির অনুকূলে নিয়ম জারি করেন।আম জনতা মানতে বাধ্য হয়ে থাকেন।খাস জনতা থাকেন বিভক্ত।
আম জনতার মধ্যে অধিকাংশেরই কোন ক্লাস নেই।তাদের বিবেচনা শক্তি টিকে থাকার সীমার আটকানো থাকে।তারা ভালো বেসে অথবা সুযোগ পেয়ে পরপুরুষ কিংবা পরনারীতে আনন্দ তালাশ করে,উপভোগ করে।তারা ধর্মের ভয়ে ভীত; কিন্তু কামের ভারে নুয়ে থাকে।অতএব,কর্মের জয় হয়।মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে চ্যুত বিবাহ প্রচলিত আছে।ধর্মে কী আছে তা নিয়ে বিতর্ক আছে।কিন্তু সেখানে তা চলমান আছে।এখানে নেই।এখানে কী আছে সে সত্য সবাই জানেন।নিরুদ্দিষ্ট স্বামীর প্রতিক্ষায় থেকে থেকে ধার্মীক নারীও অহরহ পরপুরুষে আসক্ত হচ্ছেন।তাই মাঝে মাঝে ভাঙ্গনের শব্দ শুনি; কখনো কখনো সে সকল ভাঙ্গন বড়ই মর্মান্তিক হচ্ছে।অন্যদিকে,অক্ষম সঙ্গীর সাথে থেকে থেকে অনেক নারীর জীবন দূর্বিষহ হয়।তখন তারাও নিজের পথ খুঁজে নিচ্ছে।এটি হচ্ছে চরম সত্য এবং বাস্তব।ফলে অনেকেই কামের সন্তানে পরিবার গড়ছেন,প্রেমের সন্তানের দেখা নেই।তাদের কাঠামো আছে বটে,কিন্তু অবরণ নেই; আছে দেহ আচ্ছাদিত পোশাক।অথচ এটা নিয়ে তুমুল তর্ক হয়। সুন্দরের জন্য প্রত্যাশিত সমাজ ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ; তা নেই।
বর্তমানে,মিডিয়া নিয়ে বহু কথা হচ্ছে।এটি খুব খারাপ!যারা এসকল কথা অধিক প্রচার করেন,তারাও মিডিয়ার আশ্রয়ে করেন।অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর কথা প্রচার করেন।তাদের বলা উচিত, মিডিয়ায় যা ভালো হচ্ছে, তা অনুসরণ করুন।তারা তা বলতে অক্ষম।তারা সকল মানুষকে তাদের ছাঁচে রাখা ধার্মিক বানাতে চাহেন।এখানেই সমস্যা।মানুষের মধ্যে সুপ্ত মানবিক গুণাবলির বিকাশ হলে সমস্যা কেটে যায়।
পরিবর্তনশীল সমাজে মিথষ্ক্রিয়া চলবে এবং বর্তমান বিশ্বে তা বেশি প্রয়োগযোগ্য। মিডিয়ায় ভালো অনেক কিছু হয়।তা খুঁজুন,উপভোগ করুন।অবসরকে আনন্দময় করুন।
১৩/০২/২০২২ 

ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিরোধের ডাক

 মানুষ বিশ্বপ্রকৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী উপাদান;যেটি অন্য সকল উপাদানকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে সক্ষম।সেজন্য এটাও সত্য যে, মানুষ বিশ্বপ্রকৃতির অন্য সকল উপাদানের সমস্যাও বুঝতে সক্ষম।তবে এই বুঝার ক্ষমতার দ্বার সকলের জন্য অবারিত নয়;কারণ,এই দুয়ারখানি মানুষকে নিজের চেষ্ঠা ও সাধনার দ্বারা খুলতে হয়।এজন্য একজন মানুষ নিজকে বিশ্বজগতের একটি ক্ষুদ্র উপাদান হিসেবে অনুভব করতে হবে।তাহলে বিশ্বপ্রকৃতির কোথাও এতটুকু ক্ষতি হলে তিনি বুঝতে পারবেন এবং তিনি সে ক্ষতি থেকে মুক্তির জন্য মানুষকে আহ্বান করেন, প্রতিবাদ করে থাকেন এবং প্রতিরোধের জন্য বিশ্ববাসীকে আহবান করে থাকেন।কিন্তু বাদবাকি বিশ্বের মনুষ্যকূল তখনও ঘুমিয়ে থাকেন।ফলে আহবান অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের মনে লাগেনা।

আমরা ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিরোধের জন্য সর্বাত্মক ডাক দিচ্ছি।কারণ,এটি আমাদেরকে জাতিকে শূণ্য করে দিচ্ছে।এর প্রভাবে অফিস ,আদালত,প্রশাসনে,শিক্ষায় অযোগ্য ও নষ্টদের সংখ্যা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।আমরা আমাদের ভেতরের মহত্বের বিপরীতে কাজ করে যাচ্ছি কিংবা অনেকে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি।রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে বুদ্ধি ও প্রজ্ঞার প্রয়োগ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।যেখানে দুর্নীতি দুর্বিনীত হয়,সেখানে কল্যাণ অদৃশ্য হয়ে যায়।প্রার্থনা করি,সে আল্লাহ ঘুষখোরদের কবল থেকে মানুষকে রক্ষা কর।তাদের অন্তর জাগ্রত করো।১৬/০২/২০২২

আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২

 

আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস।একজন নারী,কখনো মা,কখনো মেয়ে,কখনো স্ত্রী, কখনো বন্ধু।নারীর অধিকার,সমাজে তাঁর অবস্থান,সমাজ বিনির্মানে তাঁর অবস্থান সামগ্রিক দিকের মূল্যায়ন এবং সেই মূল্যায়নের আলোকে নারীর অবস্থানকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দেওয়ার মানসে এই দিনটি পালিত হয়।এই বছরের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছেঃGender equality today for a sustainable tomorrow" অর্থাৎ"টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য" ।
একজন নারী প্রাকৃতিক সত্ত্বায় বিভূষিত মানব। তিনি মানব প্রজন্মের ধারক ও বাহক।নারী যখন মায়ের অবস্থানে থাকেন, তখন তিনি মানব শিশুর ধারক ও বাহকের ভূমিকা পালন করেন।যখন তিনি স্ত্রী হিসেবে থাকেন,তখনও তিনি বহন করেন,ধারন করেন।যখন তিনি বন্ধুর ভূমিকায় থাকেন,তখনও তিনি বহন করেন,ধারন করেন।কিন্তু এই বাহন যন্ত্রণার অনিবার্য উপাদান পুরুষ নামের জীবের অন্যায়ের শিকার হয়েছে; কারণ,তার লাঠির জোর আছে,তার হিংস্রতা আছে।মূলতঃ এই দিবসটি পালনের মধ্য দিয়ে নির্বোধ পুরুষদের সচেতন করা অন্যতম লক্ষ্য এবং নারীও যেনো তাঁর আপন শক্তিকে বুঝতে পারেন তাও অন্যতম উদ্দেশ্য।
সচেতন হতে চাইলে মানুষকে জানতে হয়।কিন্তু আমাদের জানার পরিধি খুবই সংকীর্ণ।বিশ্বের যাবতীয় জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কিতাব পত্রে নারীদের আইনগত অধিকার সর্বোচ্চ সংরক্ষিত ; যা আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত।ফলে অপরিবর্তনীয়।ইসলাম ধর্মের কিছু সঘোষিত রক্ষকও এক্ষেত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, ইসলামের বিরুদ্ধবাদীরা সত্য না জেনে প্রায়ই অসত্য প্রচারে ব্রতী হয়ে থাকেন।ইসলাম নারীকে যতটুকু অধিকার দিয়েছে, তা চর্চিত হলেই ঝামেলার নিরসন ঘটবে।ইসলাম নারীকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সবদিকেই স্বাধীনতা দিয়েছে; তবে এর কাঠামোয় ভারসাম্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
বিশ্ব নারী দিবসে আমি সর্বোচ্চ সন্মানের সাথে স্মরণ করছি, আমার প্রায়াত জননীকে; যিনি প্রায় বছর দুই পূর্বে বিগত হয়েছেন।একমাত্র মানুষ তিনি আমার সকল প্রকার কষ্টের ভার বহন করতে পারতেন,সকল গোপন কথা সংরক্ষণ করতে সক্ষম ছিলেন।তাঁর স্বর্গীয় দীপ্তিময় অবয়ব ছিলো তুলনাহীন। সুকণ্ঠের অধিকারী আমার মা বাড়ির গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে বিয়ের গীত গাইতেন।সুন্দর করে কুরআন আবৃত্তি করতেন।মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগে আমার ছোট ছেলেকে পাশে বসিয়ে কুরআন পাঠ শুনেছিলেন।তিনি তাঁর কুরআন পাঠের শুদ্ধতা যাচাই করতে চেয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে অন্য এক নারীকে শ্রদ্ধার্ঘ দিতে চাই; তিনি হচ্ছেন আমার সন্মানিত শাশুড়ী মা।তাঁর সংগ্রামী জীবন যে কারো জন্য অনুসরণীয়। তিনি মাতৃত্বের গুণে পরিপূর্ণ এক নারী।যিনি চিত্রাঙ্গদার মতো একই সাথে পুরুষ ও নারী।মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে বিধবা হয়েছিলেন।কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন নাই।চার সন্তানকে পড়া লেখা করানো, মানবিক গুণসম্পন্ন করার সংগ্রামে রত হন।সামাজিক শত প্রতিকূলতার মাঝেও তার চার সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী করানোর স্বপ্ন সফল হয়।এই ষাটোর্ধ মা বর্তমানে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন।তাঁর মাতৃত্বের ছায়ায় অনেক অসহায় নিরাপদ জীবনের সন্ধান পেয়েছে।অথচ আজ কর্মযজ্ঞে একজন এক স্থানে।তিনি নাতি বুকে নিয়ে একাকীত্ব জয় করছেন।আমি তাঁর দীর্ঘায়ুর জন্য করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করছি।
প্রতিটি পুরুষের সাফল্যের পেছনে এক বা একাধিক নারীর প্রভাব বিদ্যমান। অথচ এই অসীম শক্তির মূল্য মানুষ অনুভব করেনা।পুরুষ নারীকে দাবিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু ইতিহাস বলে, নারীকে দাবিয়ে রাখায় নারীই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।নারীর সুপ্ত শক্তি বিশ্বকে আলোকিত করুক ; এই প্রত্যাশা রইলো।
০৮/০৩/২০২২

কয়েক প্রকার শিক্ষক

 

কয়েক প্রকার শিক্ষক

অর্ঘ্য বিশ্বাসের ক্লাসে উপস্থিতির হার কম থাকায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি।অবশেষে, সে আত্মহননের মাধ্যমেই তাঁর প্রতিবাদ জানিয়েছিলো।বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বলে কথা! এমনও দেখা যায়,দুর্নীতির মাধ্যমে কিংবা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত বহু শিক্ষক শিক্ষকতা করার জন্য অযোগ্য ; এসকল শিক্ষকই নিয়ম মানার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে থাকেন এবং এরা ভীষণ কড়া!যার পাঠদান সাদামাটা, আকর্ষণীয় নয়,তাদের ক্লাসে যাওয়া মানে অযথা সময় নষ্ট করা।তারচেয়ে বরং মুক্তামনির কনিষ্ঠায় আঙুল রেখে সবুজে হারিয়ে যাওয়াই ভালো।অন্ধকূপে হারিয়ে যাওয়া মৃত আত্মাগুলো আমাদের নষ্টালজিক সময়ের মূল্য বুঝতে অক্ষম।তাই প্রতিভাবানদেরকে তারা হত্যা করে ক্ষমতার প্রমাণ দেয়।
বর্তমানে বহু শিক্ষার্থী হত্যার শিকার হচ্ছে-কেউ শারীরিকভাবে কেউ মানসিকভাবে।হত্যাকারী হিসেবে অগ্রগামি দলে আছেন সন্মানিত শিক্ষকগণ।ছাত্র হত্যাকারী শিক্ষকদের মধ্যে একটা দল আছেন, যারা মূর্খতার সীমা অতিক্রম করতে পারেনি ; কিন্তু তাদের ক্ষমতা অসীম।এরা কেউ জ্ঞান সাধক নন,এরা চাকুরী করেন এবং পেট পুজা করেন,ছেলে-পুলে-পরিবার পালেন।এরা মহান স্বপ্ন লালন করেন না।
আরেকটা দল আছেন,যারা শিক্ষার্থীদের হৈ হুল্লোড়ে বড়ই বিরক্ত হয়ে থাকেন।তারা বাধ্য হলে শিক্ষার্থীদেরকে মাঠে নামতে দেন; অন্যথায় নয়।বিদ্যালয়ের পরিমণ্ডলে লাফালাফি করার সুযোগ থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়।কিন্তু, নির্ভরযোগ্য গবেষণায় দেখা যায়, যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হৈ হুল্লোড় করে,মুক্তভাবে কথা বলতে পারে, তারা পরবর্তীতে অধিকতর সফল হয়ে থাকে।
আরেক দল শিক্ষক আছেন, যারা শিক্ষার্থীদের তীব্রভাবে ভৎসনা করেন, তার চারপাশে একধরনের ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেন এবং এতে তিনি একধরনের আত্মতৃপ্তিও খুঁজে পান।এই হলো অবস্থা।এই অবস্থায় ভিন্ন ভিন্নভাবে অনেক সম্ভাবনাময় জীবন হারিয়ে যায় কিংবা মুক্তি পায়।
ফলে আমাদের সমাজের নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি হচ্ছে এই সকল স্কুল পালানো বা খেদানো ছেলে পুলে।এরাই দশ বিশ ক্লাস পাস দেয়নি।কিন্তু এদের জীবন যাপনের পেছনে এক নৈতিক বল আছে।
বৈষম্যযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার পাপে এমনিতে শিশুরা আক্রান্ত; তারসাথে অস্থির, অসুখী ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষক আসন নিয়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।এমতাবস্থায় কিভাবে আমরা আমাদের সন্তানদের খুন হওয়া প্রতিরোধ করি?১৫/০৩/২০২২

স্কুলের ড্রেসকোড

স্কুলের ড্রেসকোড
 
স্কুলের ড্রেস কোড শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ;ড্রেস কোডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাম্যতার মনোভাব সৃষ্টি হয়।বর্তমানে,এই বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে।বালকদের মধ্যে প্রায় শতভাগ বিদ্যালয়ের ড্রেসকোড মেনে চলে।মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে এই বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।মেয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশ বিভিন্ন রংয়ের বোরগা পরে স্কুলে আসে।এই সকল মেয়ে শিক্ষার্থীকে শিক্ষকই চিনতে পারেনা।এদের শিখনফল মূল্যায়নে এবং শ্রেণি পাঠদানে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু মেয়ে মন্দ ছেলেদের ফাঁদে পড়ে। তাদের অভিভাবকগণও তাদেরকে কিছু বলতে পারছে না।
বর্তমানে,পারিবারিক সম্পর্কের ভাঙ্গনের কাল চলছে।বিশেষকরে অনেক পরিবারে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে।এরা হিজাব পরে,মুখোশ পরে ও চশমা পরে।এদেরকে কেউ চিনতে পারে না। এরা অবলীলায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।ড্রেসকোডের ক্ষেত্রে মহিলা-পুরুষ এমন বিধি অনুসরণ করা উচিত যাতে তারা নারী না পুরুষ চেনা যায়।এতে তারা সন্মানিত হবেন। কিন্তু এখন এটি উপেক্ষিত হচ্ছে।
প্রশাসনে,সেনাবাহিনী, পুলিশ,আনসার সব স্থানে নারী সদস্য আছেন; তারা সকলেই সুনির্দিষ্ট পোশাক পরে থাকেন।শুধুমাত্র বিদ্যালয়েই যতো সমস্যা।অথচ,পোশাক একীভূত শিক্ষাকে উৎসাহিত করে।সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো উচিত।
সকল ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি নিন্দনীয় অবস্থাকে আহবান করে থাকে।অতি ধার্মিকতা থাকে হঠাৎ করেই তুরস্কে একদিন বোরকা নিষিদ্ধ হয়েছিল, হাজার হাজার আলেম হত্যার শিকার হয়েছিল,আজান নিষিদ্ধ হয়েছিল।আল্লার ভয় যে জাতির অন্তরে জাগেনি,তারাই অন্যায্য বিধানে মানুষকে বাঁধতে চায়।অন্দরে পাপের ফসল ফলিয়ে বাইরে ধার্মিকের আচরণ চূড়ান্ত মোনাফিকের কাজ।মুনাফিক সফল হয়না।ফলে, আল্লাহ তা'আলা এর বিহিত করেন।মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতারণামূলক আচরণ তাদের ধ্বংসের জন্য দায়ী।প্রায় ৯০ শতাংশ মুসলমানদের দেশে ঘুষ বন্ধ হয়না,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুরা বলৎকারের
শিকার হচ্ছে।অথচ,কেউ মার্জিত পোশাক পরার কথা বললে অধার্মিকের অকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
২২/০৩/২০২২

 

এনসিটিবি বনাম মাউসি

 

এনসিটিবি বনাম মাউসি

এনসিটিবি শ্রেণিভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক নির্ধারণ করে থাকে;তাদের একদল গবেষক আছেন।তারা পাঠ্যপুস্তক পাঠদানের জন্য শিক্ষকের জন্য সহায়ক পুস্তক প্রণয়ন করে থাকে।সাথে সাথে শ্রেণিতে পাঠ উপস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় পাঠপরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে ; যে পরিকল্পনায় শ্রেণি পঠন পাঠনের সময়ও নির্ধারণ করে থাকে।অন্যদিকে, মাউসি'র মূল কাজ হচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন চালানো ; তাদের চেয়ার ক্রমাগত পরিবর্তন হয়,যে টুকু তারা করে থাকেন- তা হলো ক্ষমতা প্রয়োগের চর্চা; তাদের গবেষণা করার সুযোগ নেই।
 
যেহেতু, এন সি টি বি'র ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ সীমিত, সেহেতু তাদের কথা কে শুনবে?রমজানে কিভাবে, কয়টি পিরিয়ড চলবে এ নিয়ে মাউসি একটি নির্দেশনা দিয়েছে ; যেখানে তারা বলেছেন,২১০ মিনিটে পাঁচটি পিরিয়ড় চলবে।তাহলে প্রতি পরিয়ড়ের বিস্তার হচ্ছে ৪২ মিনিট। কিন্তু প্রথম পিরিয়ড যদি একঘন্টা হয় তাহলে বাকিগুলোর সময়কাল হবে ৩৭.৫ মিনিট করে।অন্যদিকে, যদি শিক্ষকদেরকে এন সি টি বি'র বিশেষজ্ঞ দলের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হয়,তাহলে প্রথম পিরিয়ডকে একঘন্টা ধরতে হয় এবং বাকি পিরিয়ড়ের প্রতিটি হওয়ার কথা ৫০ মিনিট করে।আমরা দেখেছি,এই সময়কালে শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়ন এবং একক কাজ,দ্বৈত কাজ ও গ্রুপভিত্তিক কাজে যুক্ত করা যায়।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের সময় শ্রেণি পঠন পাঠনের যে পরিকল্পনাকে সামনে রেখে পরিচালনা করা হয়,সেগুলো এন সি টি বি'র নির্দেশনার আলোকেই করা হয়।কিন্তু মাউসি কেমন করে প্রশিক্ষণের সাথে দ্বান্দ্বিক সিদ্ধান্ত প্রদান করে- তা বোধগম্য হচ্ছেনা।
মাউসি শিক্ষণ শিখানো বিষয়ে যে কোন নির্দেশনা প্রদানের আগে নির্ভরযোগ্য গবেষণা অনুসরণ করা উচিত; এটি আমরা কল্যাণকর মনে করছি।কয়টা পিরিয়ড চলবে সে নির্দেশনা না দিয়ে কয়টা পর্যন্ত চলবে-তা-ই বলা উচিত।০১/০৪/২০২২

ন্যায্যতা ও অধিকার

 ন্যায্যতা ও অধিকার

মানুষের মৌলিক অধিকার ও সম অধিকার দুটো ভিন্ন বিষয়।মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করতে গেলে সম অধিকারের বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়; কিন্তু এটি ব্যক্তি নিরপেক্ষ বিষয়।ফলে অযোগ্য ব্যক্তি যখন সম-অধিকার বাস্তবায়নের দাবী তোলে তখন সে তার অযোগ্যতাকে উপেক্ষা করার ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দেয়।ন্যায্যতার অনুকূলে অধিকার বাস্তবায়ন করা হলেই সম-অধিকারের দাবী পূর্ণতা পায়। সমাজে কাজের ক্ষেত্র এবং যোগ্যতার বিচারে অর্জিত অধিকারের সীমা নির্ধারিত। একজন বিজ্ঞানীর গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা করা তার অধিকার; এতে অনেক টাকা খরছ হতে পারে।এতে যদি কুমার শ্রেণি দাবী তোলে আমাদেরও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হোক; তা অন্যায্য।
 
সমাজে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন,যাদের উপস্থিতি একটি সমাজকে উজ্জ্বল করে,নন্দিত করে; তাদের দ্বারা সমাজের আর্থিক উন্নতি হয়না।কিন্তু তাদের দ্বারা জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় দেওয়ার সুযোগ হয়।রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে জাতীয় অস্তিত্বের বহু ধারক অবহেলিত হচ্ছেন।ফলে যারা আমলা কামলার নজরে আসছেন,তারা গৌরবান্বিত (!) হচ্ছেন।পুরস্কৃত হচ্ছেন,আবার পুরস্কার ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সুন্দর ও সত্যের ধারক আড়ালেই থেকে যাচ্ছেন।জাতীয় চরিত্রের মতোই তৃণমূলে কিংবা পরিবার সকল স্থানেই ন্যায্যতার চর্চা নেই। 
 
অর্থ আয়ের চেয়ে ব্যয়ে অধিকতর বিজ্ঞতা প্রত্যাশিত।এটি বোধে প্রবেশপথ না পেলে চিরদিনই আমাদেরকে পরিচয় সংকটে ভুগতে হবে।৩০/০৪/২০২২

ধর্ম ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রসঙ্গে

 

ধর্ম ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রসঙ্গে

তোমরা যুক্তি দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করো, প্রতিরোধ করো।চিৎকার, চেচামেচি করে লাভ নেই।অতি সম্প্রতি ১১৬ জন ব্যক্তির নামের তালিকা সাবেক এক বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন দুদকে দিয়েছেন।তাঁরা তালিকা প্রদানের সাথে সাথে যোক্তিক কারণও ব্যাখ্যা করেছেন।যাদের নাম এসেছে তাদের বিশাল এক সমর্থক গোষ্ঠী এদেশে আছে।পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কমেন্টে তাদের মতামত দেখলে বিব্রত হতে হয়।খুবই বাজে শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার করে তারা তাদের দীনতাকেই প্রকাশ করেছেন।আমি মনে করি, যাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে তারা যদি নিজেকে অপরাধী মনে না করেন, তারা লড়াইয়ে নামুন।যাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে, তাদের অনেকে বিপুল পরিমান অর্থ আয় করে থাকেন।এখন প্রশ্ন হলো, তাদের এই আয়ের বৈধতা আছে কি? অর্থাৎ এই অর্থ কি সাদা না কালো? সেই বিষয়ে তারা কি নিশ্চিত? তা না হলে অতি দ্রুত তার সুরাহা করা উচিত।যারা তালিকা করেছেন,তারা তৃণমূলে গিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।অতএব, সন্মানিত ওয়াজিনবৃন্দ আপনারা মুখের জোরে না লড়ে, আইনের জোরে লড়ুন।উপার্জিত টাকার উৎস এবং ব্যয়ের হিসাব রাখুন।এটাই উত্তম।
গণকমিশনের প্রতি অনুরোধ
ধর্ম ব্যবসায়ী অভিহিত করে আপনারা এই তালিকা দিয়ে নিজস্ব বিবেকের দায় থেকে মুক্ত হয়েছেন।আপনারা তেমনটা মনে করেন।কিন্তু দেশে অন্যান্য খাতে প্রচুর পরিমাণে চোর, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ আছে ; এবার তাদের একটি তালিকা করার অনুরোধ করছি।এদের কারণে, সরকারের অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।আশাকরি, বিজ্ঞ কমিশন একটা পদক্ষেপ নিবেন।১৬মে,২০২২

মৌসুমী জলসা বা ইসলামি বক্তৃতা

ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে মুসলিম সমাজ তথা সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরার জন্য দেশে হাজার হাজার দ্বীনি প্রতিষ্ঠান আছে।এগুলো কিছু আছে সরকারি তত্ত্বাবধানে, কিছু আছে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে। এসকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী দীর্ঘ সময় ধরে দক্ষ শিক্ষকের তত্বাবধানে থাকেন এবং মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠার সুযোগ পায়।মৌসুমি বক্তৃতায় মানুষের মনে দ্বীনি জঝবা সৃষ্টি হয় মাত্র।মুসলিম হিসেবে যারা নিজেদের দাবি করতে চাহেন,তাদের উচিত নিজেই কুরআন অধ্যয়ন করা,অনুধাবন করা।পবিত্র কুরআনে আমাদের কুরআন অধ্যয়ন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।এতে সুবিধা হলো, এই অধ্যয়নের মাধ্যমে আপনার ভেতর আলোকিত হবে।অন্যদিকে, কয়েক ঘণ্টার মাহফিলে বসে, শুনে আপনি সত্যকে আবিষ্কার করতে পারবেননা এবং আপনার ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যাবে।যাদের কারণে অগণিত মানুষের ফজরের নামাজ কাজা হলো, তারাও এই দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা নেই।

এজন্য আমি মনে করি,মাদ্রাসার দক্ষ শিক্ষকের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে অগণিত ছাত্র যুবাকে মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলার শপথ নিন।ছাত্ররা জানুক,তাদের শিক্ষকগণ সৎ, কাহাকে ঘুষ দেয়না, ঘুষ খায়না,তারা মানবিক,প্রতিবেশীদের প্রতি দায়িত্বশীল ; এতেই তো সত্যিকার ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।বড় আয়োজন করে জলসা করার প্রয়োজন হবেনা।১৬মে,২০২২

নিন্দা ও যশের ইউনুস

 

নিন্দা ও যশের ইউনুস

    ডঃ ইউনুসকে আমি কোনো দিন দেখেনি।দেশের একটা অংশ মনে করেন, তিনি বিএনপি ঘরানার মানুষ। অনেকেই তাকে সুদখোর বলে নিন্দা ব্যাক্যে বিদ্ধ করেন।কিন্তু ব্যক্তি ইউনুসের আন্তর্জাতিক খ্যাতিতে সমস্যা হয়না।এমনিতে এই দেশটা হলো, ভিন্ন মত ও পথের মানুষের জন্য কারাগার।ইউনুসের রাজনৈতিক উচ্চ বিলাস তার চলার পথকে সীমায়িত করেছে।দেশ শাসনের দাবিদার সম্প্রদায় তাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছে।অথচ বাদবাকি বিশ্ব ইউনুসকে নিয়ে গর্ব করে।এখন বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তার উপস্থিতিতে নন্দিত হয়।এখন প্রশ্ন হলো, যাদেরকে তিনি ঋণ দিয়েছেন,তারা তার কর্মকে কিভাবে মূল্যায়ন করছে? ঋণগ্রহীতাদের জন্য ইউনুসের প্রতিষ্ঠানের সামাজিক সুরক্ষার জন্য কিছু কর্মসূচি ছিলো।বিশেষ করে, ঋণগ্রহীতাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাঋণ প্রদানের প্রকল্প ছিলো। এটি বেশ ফলপ্রসূ ছিলো। সম্ভবত এই প্রকল্প এখনো চালু আছে।যারা তার প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন বা নিয়েছিলেন তাদের অভিমত নিয়ে নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলও আমাদের জানা নেই।কিন্তু আমি দু'একজনের সাথে আলাপ করে জেনেছি,তারা এই ঋণদান প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব রাখেন।
এটাও সত্য যে, ইনি নিন্দিত হলেও তার প্রতিষ্ঠানই এদেশে জামানতহীন ঋণদানের সুযোগ দিয়েছে।কোন ব্যাংক জামানতহীন ঋণ দেয়নি কিংবা দেয়না।
২৪মে,২০২২

নাম পরিবর্তনের সংস্কৃতি

 

নাম পরিবর্তনের সংস্কৃতি 
 
একটা নাম ইতিহাসের অংশ।পাকিস্তান সৃষ্টির পরে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির তকমা দিয়ে বিভিন্ন স্থান ও স্থাপনার নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চলেছিল। সাধারণ মানুষ একে ভালো মনে মেনে নেয়নি।বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরে যৌক্তিক কারণে, শোষক শ্রেণির চিহ্ন মুছে দেওয়ার প্রত্যয়ে বেশ কিছু স্থাপনা ও স্থানের নামে পরিবর্তন আনা হয়।তখন এর বিরুদ্ধে কিছু বলার সুযোগ বা সাহস কারো ছিলো না।কিন্তু বর্তমানেও বিভিন্ন রাজনীতিবিদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে থাকেন।আমরা মনে করি,নাম পরিবর্তনের পেছনে যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করা প্রয়োজন। কারণ, নামের পরিবর্তন একটা জাতির নৃতাত্ত্বিক সূত্রকে গায়েব করে দিতে পার।
 
এখন,নামের পরিবর্তন নিয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।কোম্পানিগঞ্জের একটা পুরোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে,রামপুর ফকিরের হাট বজলের রহমান মডেল প্রাইমারী স্কুল।এটি বর্তমানে রমিজ উদ্দিন হাজী বাড়ির দরোজায়।বিগত শতাব্দীর প্রথম দিকে এটি বর্তমান রংমালা মাদ্রাসার পশ্চিম পাশে ছিলো।সেখানে ফকিরের হাট নামে একটা বাজার ছিলো। ছোট ফেনী নদীর ভাঙ্গনে পড়লে একে সরিয়ে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করা হয়।যাই হোক।যেহেতু,উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন ভিক্ষুক; তিনি ভিক্ষা করেই এটি প্রতিষ্ঠা করেন।নিজের পৈতৃক ভূমি দান করেছিলেন।এখনও সে জমি বিদ্যালয়ের নামেই আছে।কিন্তু বছর কুড়ি আগে একটা গোষ্ঠী এই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের তোড়জোড় শুরু করেন।শিক্ষা বিভাগের কর্তাগণ এর প্রতিষ্ঠার পেছনে সত্য জেনে নাম পরিবর্তন প্রত্যাশী দলকে তিরস্কার করেন।এজন্য,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের আয়োজন যেন অতীতের নিবেদিতপ্রাণ মানুষের অবদানকে উপেক্ষার কারণ না হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং এবং অন্যান্য

জন্মসূত্র উপেক্ষার বিষয় নয়; অহংকারের বিষয়। যারা জন্মসূত্রকে উপেক্ষা করে,তারা নিজেই উপেক্ষিত হওয়ার পথ সৃষ্টি করে।
    মাতা পিতা সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়।সন্তানদের অধিকাংশই ভুলে যায়,তারা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে? তারা সেখানে গিয়ে আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হবে,নিজেকে আগামী পৃথিবীর জন্য যোগ্য করে তুলবে,সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এক অনন্য সুন্দরের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করবে।কিন্তু জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংস্কৃতি চর্চার দৈন্যতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে গমনের লক্ষ্য অর্জন করা যাচ্ছে না। বর্তমানে, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যবিষয় ও পাঠ্যক্রম বিন্যস্ত হচ্ছে অতি সংকীর্ণ মানসিকতার উপর ভিত্তি করে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক বিষয় উপেক্ষিত। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের চিত্ত বিকাশের সুখ পাচ্ছেনা। তারা ভর্তির শুরুতেই ভবিষ্যতে বিত্তবান হওয়ার স্বপ্ন দেখে ; যা তাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়।তারা না পারে নিজেকে কিছু দিতে, না পারে পরিবারকে, না পারে দেশকে।তারা নিতান্ত আত্মকেন্দ্রিক বস্তুতে রুপান্তরিত হচ্ছে।
যাদের নিয়ে পরিবার গর্ব করে, সম্ভাবনা দেখে তারাই অচিরেই হতাশার কারণ হয়ে যাচ্ছে। এখানে এসে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঋদ্ধ করবে,সিদ্ধ পুরুষ হবে; এরকমই সকলের প্রত্যাশা থাকে।কিন্তু কোথায় যেনো ফাঁক থেকে যাচ্ছে!
এজন্য আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দু'একটা কোর্স অভিজ্ঞ অধ্যাপকগণ নেওয়া উচিত।মাত্র কৈশোর পেরুনো শিক্ষার্থী যেন তাদের চিত্ত বিকাশের আগেই চিত্তদাহের শিকার না হয়।কারণ,এরা বইয়ে মন না দিয়ে, মন বিনিময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তাদের এমন নির্বুদ্ধিতা সম্পর্কে কোর্সের শুরুতেই সতর্ক করা উচিত। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা কর্মজীবন,সংসার জীবন ও ধর্মীয় কাজে ব্যর্থ হয়েছে তারা সকলেই জ্ঞান-বিনিময় না করে মন বিনিময়েই কাল কাটিয়েছেন। এটা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যচ্যুতি।ফলে আমাদের ক্রিয়েটিভ কাজে যারা অগ্রসর তাদের অধিকাংশের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রির তকমা নেই কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনের জন্য তাদের কোন প্রকার অহংকারও নেই।এদেশকে যারা গার্মেন্টস শিল্পে উচ্চ স্থানে নিয়ে গিয়েছেন, তারা ক্রিয়েটিভ,স্বশিক্ষিত,আত্মবিশ্বাসী কিন্তু বেশিরভাগি উঁচু ডিগ্রিধারী নয়।এরা নিজেরা জাগ্রত।কারণ,তারা জন্মসূত্রকে স্মরণ করে, শ্রদ্ধা করে এবং মাতাপিতাকে বিশ্বাস করে; সাথে সাথে তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা দেয়।
অন্যদিকে, মুক্ত স্বদেশে অন্য এক ধরনের শিক্ষার্থী আছে,যারা পরিচয় সংকটে বিব্রত। বিব্রত আরো বহু ক্ষেত্রে।কিন্তু তারা চায় প্রতিষ্ঠা। এজন্য তারা কৌশলী পথে এগিয়ে যায়।আমাদের পরিচিত দু'চার জন্য আছেন,যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ব চুকানোর আগেই ঘর বেঁধেছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকানোর পরপরই বাঁধন চিহ্ন হয়ে যায়।এতে একপক্ষ তীব্র ঘৃণা ও আক্রোশ নিয়ে সরে যেতে হয়েছিলো। এখানে,সকল ক্ষেত্রেই নারী সঙ্গীই গুণে গুণে টাকা নিয়েছিলো। কিন্তু তাদের মাতাপিতা, অভিভাবক কেহই চায়নি , জীবনের শুরুতে তাদের সন্তানদের তেমনতর চিত্তদাহ আসুক।
যে লক্ষ্য নিয়ে ছেলে মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে,তাদের সেই লক্ষ্য অর্জিত হোক ; এই প্রত্যাশা করি।র্যাংকিং নিয়ে আমাদের ভাবতে হবেনা।১১/০৬/২০২২

প্রসঙ্গঃফেজবুক ওয়াজিন

 

প্রসঙ্গঃফেজবুক ওয়াজিন
ফেসবুক ওয়াজিনের ভয়ে আমি ভীত।এদের প্রায় প্রত্যেকের ওয়াজ আমি মনোযোগ সহকারে শুনে থাকি।কিন্তু অধিকাংশই অনুমানের উপর ভিত্তি করে বহু তথ্য উপস্থাপন করে থাকেন।ক'দিন আগে একজন খ্যাতিমান বললেন,পৃথিবীতে ৩৫০ কোটি খ্রিস্টান আছে,মুসলিম আছে ২০০ কোটি, বৌদ্ধ ২০০ কোটির উপরে, আরো আছে হিন্দু, জৈন,শিখ। আম জনতা এসব শুনে, পরষ্পরে আলোচনা করে,আর মাঝে এদের রেফারেন্স দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দেয়।এসব ওয়াজিনের অনুমানের উপর এদের(ওয়াজিন) প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস আছে বুঝা যায়।কিন্তু এরা ভুলে যায়, মানুষ ক্ষমা প্রার্থী হলে আল্লাহ অবস্থার পরিবর্তন করে দিতে পারেন এবং কিয়ামত,ইমাম মেহেদী, দাজ্জাল হয়তো আগামী শত বছরেও আসবেনা। আমি বুঝতে পারছিনা, এরা এটা কি জানেনা?
আমি বুঝতে পারি, আল্লাহ কারো উপর অসন্তুষ্ট হলে তাঁর মুখ দিয়ে বিভ্রান্তিকর বাক্য বের করেন, তাদের আচরণে স্পষ্টতঃ শরিয়তের বিধিবিধানকে উপেক্ষা করার সুযোগ করে দেয়; ফলে তারা তাদের আগুনে জ্বলে পুড়ে মরে।এই নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি।অথচ মাঝে আম জনতার বিশ্বাসে আঘাত আসে।সরকার এই বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত।ইসলাম কারো ব্যক্তিগত বিষয় নয়; যেমন ইচ্ছে, তেমনি ব্যাখ্যা করবে।।আল্লাহ সহজ সরল মানুষদেরকে এদের বিভ্রান্তিকর শব্দবাণ থেকে রক্ষা করুন।

মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাহুগ্রাস

 

মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাহুগ্রাস
মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিশু ও কিশোরদের পাঠদান করা হয়।এক সময় আমরাও বিদ্যালয়ে ছিলাম, স্যারদের কাছাকাছি ছিলাম।স্যারেরা আমাদেরকে শাসন করেছিলেন,যত্নও করেছিলেন।তখন বিদ্যালয়ে ছাত্র নেতৃত্ব নির্বাচিত হতো।স্যারেরাই নেতা নির্বাচিত করতেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেধাবী ও স্কাউটের সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীরাই নেতা নির্বাচিত হতেন।
এখন সময় বদলেছে।বিদ্যালয়ে ক্যাবিনেট হয়।বড় আয়োজন। প্রায় সকল ক্যাবিনেট নির্বাচনে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিবর্গের সম্পৃক্ততা দেখা যায়।ফলে এসকল ছাত্ররা অতি দ্রুত এলাকার বড় ভাইদের হাতের লাঠি হয়।তাদের পড়া লেখা লাটে ওঠে।তাদের বাকি সময় মন্দ স্রোতের প্রবাহে প্রবাহিত হয়।তাদেরকে বড় ভাইয়েরা নেতা বলেই ডাকাডাকি করে।তাদের ভাব কে দেখে! 
 
    এই পর্যায়ে মহা সংকটে আছেন, দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদেরাই।এরা অসাম্প্রদায়িক এবং শিক্ষাদানে একনিষ্ঠ। এরা অন্যায় দেখলে মুখ খুলেন,কথা বলেন। এরা শিক্ষক হিসেবেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকটে জনপ্রিয়।এখানেই মূলতঃ সমস্যা।তারা দলবাজি করেন না।এজন্য তারা দুর্বল।মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আছে।তাদের কর্মী ও সমর্থক গোষ্ঠী স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় জড়িত।কিন্তু তাদের চোখের উপরেই শিক্ষক হেনস্তা হচ্ছেন,খুনের শিকার হচ্ছেন।এবং যারা এর শিকার হচ্ছেন, তারা সকলেই হিন্দু ধর্মালম্বী শিক্ষক।এটি বড়ই বিব্রতকর। বিষয়টি উপর মহল থেকেই তদন্ত করা উচিত।এতে কোন প্রকার গাফেলতি অগ্রহণযোগ্য। যারা উন্নত এবং দেশের সত্যিকার নির্মাতা, তাদেরকে ধ্বংসের প্রক্রিয়া দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।

বই ও ক্রেস্ট সমাচার

 

বই ও ক্রেস্ট সমাচার
ক্রেস্টেই ভক্তি,ক্রেস্টেই মুক্তি!শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন থালা,বাসন,বাটি, গ্লাস দিয়ে জাতীয় শিক্ষা সাপ্তাহ,ক্রীড়াসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদানের জোয়ার শুরু হলো,তখনই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এসেছিলো। তারা জানালেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল প্রতিযোগিতা ও সন্মানিত করার পুরস্কার বই দিয়ে দিতে হবে।সকলেই বইয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করলেন।কিন্তু বইকে দেয়া হলো হলো না।কারন,বইয়ের মুখ আছে; তার পাতা উল্টালেই সে কথা বলে।সে কথা বলে,যুক্তি ও মুক্তির কথা।এতো কথা কারই বা ভালো লাগবে? অবশেষে, সকলেই ভরসা করলেন ক্রেস্টে।ড্রয়িং রুমে সদা প্রদর্শিত ক্রেস্ট দেখে উপহার পাওয়া ব্যক্তির অহংকারে বুক ফুলে উঠবে,সিরামিকের শাদা থালায় খেতে বসে সামাজিক উঁচু আসনের কথা মনে পড়বে। কিন্তু ভালো বই আমাদের ভেতর জাগিয়ে তুলবে।বই নিয়ে বোঝাপড়া, কথা বলা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।
একসময় আমরা আলোচনা করতাম কার কয়টা বই আছে।এখন আলোচনা হয়, কার কয়টা ক্রেস্ট আছে।থালা, বাসন,বাটি উপেক্ষিত থেকে যায়।অচিরেই প্রাপ্ত থালা,বাসনও আলোচনার বিষয় হবে।
সমাজ যখন উল্টো স্রোতে বহমান থাকে,তখন জ্ঞানীরাই সজ্ঞানে হাল ধরে থাকেন।আমাদের যে কী হলো! সকলেই ভেসে যাচ্ছি।এমন চলা অনুচিত।বিদ্যালয়ে আসন্ন প্রতিযোগিতায় বইকেই পুরস্কার হিসেবে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।এটা বিবেক,প্রজ্ঞা ও সময়ের দাবি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ থাকলো, তারা যেন বিশেষ নির্দেশনা দেয়।প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন পুরস্কারের জন্য কেনা বইয়ের ছবি প্রেরণ করে।এতে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হবে।
২৭/০৭/২০২২

টাইলস ব্যবসায় ভোক্তা ঠকানোর কলা কৌশল

 

টাইলস ব্যবসায় ভোক্তা ঠকানোর কলা কৌশল

দেশে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় আইন আছে,আইন প্রয়োগের জন্য সরকারি কর্মকর্তা আছে।কিন্তু এসকল কিছু থাকার পরেও ভোক্তা অধিকার কতোটুকু রক্ষিত হচ্ছে? এটা আমাদের জিজ্ঞাসা।এক্ষেত্রে কতিপয় সমস্যা পরিলক্ষিত দেখা যায়।প্রথমতঃ উপজেলা পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ আসবার সুযোগ কম।দ্বিতীয়ত ভোক্তাগণ ঠকলেও এ-র প্রতিকার সম্পর্কে অবহিত নয়।তারা জানেনা কোথায়, কিভাবে অভিযোগ করতে হবে।এজন্য আমারা কিছু সুপারিশ করতে চাই।

ভোক্তাগণ কিভাবে,কোথায় ও কেনো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তা অনুসন্ধান করা উচিত।কিছু পন্য ভোক্তারা সারা জীবনে একবারই কিনে থাকে।এসকল পন্য ক্রয়ে ভোক্তা অধিকার সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হচ্ছে।এগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে আছেঃ গৃহ নির্মাণ সামগ্রী। আমি গৃহ নির্মাণ সামগ্রীতে ব্যবহৃত বিলাসী পন্য হিসেবে স্বীকৃত টাইলস নিয়ে বলতে যাচ্ছি।এ-ই পন্যে ভোক্তারা প্রতিনিয়তই ঠকে যাচ্ছেন।অধিকাংশ টাইলস ক্রেতা বিক্রেতা কর্তৃক প্রতারিত হয়েছেন বলে মনে করে থাকেন এবং ঠকেছেন বুঝতে পারলেও তারা কেহ ভোক্তা অধিকার রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দারস্থ হননা।অনেকেই লজ্জা বোধ করেন।অনেকে অফিস পর্যন্ত যাওয়ার উপায়ও জানেন না। ফলে অসাধু বিক্রেতাদের অপকর্ম চলমান আছে।এজন্য ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের উচিত নিজ উদ্যোগে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা।আমি তাদের সদয় জ্ঞাতার্থে টাইলস বিক্রেতাদের অসাধুতার কতিপয় দিক ইঙ্গিত করছি।এটি মূলতঃ মাঠ পর্যায়ে সংঘটিত ঘটনা।
ক)অধিকাংশ টাইলস বিক্রেতাগণ তাদের মেমোতে সুনির্দিষ্ট টাইলসের মাপ, কোড ও কোম্পানির নাম উল্লেখ করেন না।টাইলস মিলি মিটার বা ফুটে বিক্রি করা হয়।এগুলো সব একই মাপের নয়।ফলে প্রতি কার্টনে রক্ষিত টাইলসের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।বিক্রেতারা শুধুমাত্র কার্টন সংখ্যা ও টাকা উল্লেখ করে থাকেন।অনেক সময়ে শুধুমাত্র টাকার মান উল্লেখ করে থাকেন।
খ) বিক্রেতাগণ এক কোম্পানির পন্য দেখিয়ে অন্য কোম্পানির পন্য সরবরাহ করেন।তারা পন্যের কোম্পানির নাম ক্যাশ মেমোতে উল্লেখ করেন না।
গ) বিক্রেতাগণ টাইলস মেস্তরীদের সাথে আঁতাত করে টাইলসের হিসেবে গরমিল করেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা টাইলসের হিসেবে বেশি দেখিয়ে থাকেন এবং টাইলস সরবরাহের সময় বেশি দেখানো টাইলস দোকানেই থেকে যায়। পরে টাকা ভাগাভাগি হয়।
ঘ)বিক্রেতারা কার্টন খুলে নিম্ন মানের পন্য পুনস্থাপন করেন এবং তা সরবরাহ করেন।অর্থাৎ এ গ্রেডের টাকা নিয়ে বি গ্রেডের পন্য/টাইলস হস্থান্তর করেন।একাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা বিষয়টি বিশেষভাবে অবগত। তাদেরকে গোপনে জিজ্ঞাসা করলে তারা সত্য প্রকাশ করবে।
ঙ) এতো কিছুর পরেও কিছু ব্যবসায়ী সততা রক্ষায় প্রতিশ্রুতবদ্ধ। তারাই এসকল অসাধুদের অনাচারের শিকার হচ্ছেন।তাদের ব্যবসা গুটিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এজন্য যথাযত কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান অনাচার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
ভোক্তাদের প্রতি পরামর্শঃ
টাইলসের সাইজ সম্পর্কে জানুন।বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সাইজের , বিভিন্ন মান/ গ্রেডের টাইলস ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে।
আমরা সাধারণ কাস্টমার প্রচলিত (8*12,10*16,12*20,16*16/20*20,12*18 ইত্যাদি)সাইজের যে কোন টাইলস ক্রয় করতে পারি। কিন্তু আমরা কি কখনো হিসাব করে দেখেছি বা দেখি, আপনার ক্রয়কৃত টাইলস কত বক্স/ কত পিচে সঠিক পরিমাণ হবে।
দালালের হাতে দায়িত্ব দিতে সতর্ক থাকুনঃ
আমরা বেশির ভাগ কাস্টমার এবিষয়ে অসচেতন।আপনি হিসেবের ভার খুচরা ব্যাবসায়ী কিংবা টাইলস মিস্তিরির হাতে তুলে দিয়েছেন। এই সুযোগে কিছু অসাধু খুচরা বিক্রেতা মূল্য পরিশোধের অনুকূলে প্রাপ্য ক্রয়কৃত পণ্য সঠিক মান( গ্রেড ) ও পরিমাণ সরবরাহ করছে না।সাধারণ কাস্টমারদের ঠকিয়ে কেউ কেউ তৃতীয় পক্ষ(দালাল)কে টাকা দিয়ে টাইলস বিক্রি করছে। এসব ব্যবসায়ী ক্রয় রশিদে ক্রয়কৃত পণ্যের সঠিক পরিমাণ ও মান গ্রেড উল্লেখ করছে না।এই দুষ্টু চক্রের ফাঁদে আমরা ক্রেতা সাধারণ প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এক্ষেত্রে টাইলস ক্রয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আপনার চাহিদা অনুযায়ী ক্রয়কৃত টাইলসের প্রতিটি আইটেমের ডিটেইলস মেমো তে উল্লেখ আছে কিনা দেখা উচিত। (যেমন : টাইলসের কোড, সাইজ, গ্রেড )এবং টাইলস ক্রয়ের অনুকূলে পণ্য সরবরাহের বিবরণ (যেমন: কত কার্টন ,কত পিচ ইত্যাদি )
ভোক্তা অধিকার রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরজমিনে টাইলস বিক্রেতাদের দোকান পরিদর্শন করলে এ-র সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন।তাঁরা বিক্রেতাদের ক্যাশ মেমো, চালান ইত্যাদি যাচাই করে দেখতে পারেন।
একজন ব্যক্তি সারা জীবনের স্বপ্ন নিয়ে গৃহ নির্মাণ করেন।টাইলস করেন।জীবনে একবার করা কাজ করতে গিয়ে বিক্রেতা কর্তৃক প্রতারিত হন।তাদের দীর্ঘশ্বাসের শব্দ আমাদের অনুধাবন করা উচিত।
২৯/০৭/২০২২

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বর্তমান প্রবণতা

 

মানব শিশুর সামাজিকীকরণে মিথষ্ক্রিয়া অতি পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি শব্দ।মজার বিষয় হচ্ছে এটি বিশেষ্য; এ-র বিপরীত শব্দ নেই।আমি পাচ্ছিনা।পারষ্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটা উন্নততর অবস্থায় উপনীত হওয়ার পথকে মিথষ্ক্রিয়া বলে।আমি মিথষ্ক্রিয়াকে মানুষের অভিযোজন সক্ষমতার সাথে সমানুপাতিক সম্পর্কে যুক্ত বলে মনে করি।কারণ,এই প্রক্রিয়ায় মানবজাতি তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এবং ক্রমাগত উন্নততর অবস্থায় উপনীত হচ্ছে। কিন্তু পারষ্পরিক যোগাযোগের, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পরে যদি অবনত অবস্থায় পৌঁছে, তাহলে তাকে কী বলা হবে? এটি আমার জানা নেই।শিক্ষা বিজ্ঞানের পারিভাষিক শব্দ হিসেবে বিবেচনা করলে এটি নিসন্দেহে একটি ইতিবাচক শব্দ এবং প্রত্যাশিত।
লক্ষ্য অভিন্ন হলে কিংবা কাছাকাছি হলে মিথষ্ক্রিয়া সহজতর হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল পরিবেশে এই প্রক্রিয়া চলমান থাকে এবং এ-র মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পারষ্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় করে।ভিন্ন মত ও পথকে যুক্তির মানদণ্ডে পরিমাপ করে।অবশেষে, সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।এখন প্রশ্ন হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোন লক্ষ্য অর্জনের জন্য সেখানে যায়? নিশ্চয় তারা নতুন উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রজ্ঞার বিস্তারণের মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃজনের লক্ষ্য নিয়ে যায়।
বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির অস্থির অবস্থা দ্বারা সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক বিশাল অংশ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গ্যাছে।তারা চাকুরী মুখি প্রবণতা দ্বারা প্রবলভাবে আক্রান্ত।অনেকেই শিক্ষা জীবনের এ-ই পর্যায়ে এসে বিসিএস-এর আদলে একটি চাকুরী পাওয়ার আশায় শিক্ষা অর্জন করছে।ফলে উন্নয়নের মানবিক দিক চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে।অন্যদিকে, জ্ঞানচর্চার সামষ্টিক শক্তির দিকে তারা দৃষ্টি কেউ দিচ্ছে না।শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশ যুগলপ্রেমের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে ; যা তাদের সামষ্টিক প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের মহত্ত্ব ও বিশালত্ব অবহেলিত হচ্ছে।তারা প্রকৃতির সৌন্দর্যের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সাহস ও শক্তি হারিয়েছে।বিশাল প্রকৃতি যে আমাদের মৌলিক শিক্ষালয়- তা আমরা ভুলে যাচ্ছি।
এজন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক,অভিভাবক সকলেই সচেতন হওয়া উচিত।শিক্ষার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের সাধন পথ রচিত হবে; যাতে আমাদের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।
০৩/০৮/২০২২

আশুরার তাৎপর্য

আড্ডার দিনগুলো---00 আশুরাঃ আড্ডা মানেই গল্প করা;চিৎকার নয়।আড্ডা মানে কিছু প্রশ্ন, কিছু উত্তর। আড্ডা মানে অতৃপ্তির অপনোদন।এটা সময়কে উপভোগ করার উপায়,সময়কে ধরে রাখার কৌশল। প্রায় প্রতিদিন আমাদের আড্ডা জমে।আমরা সঠিক জানিনা কোন বিষয়টি আগামীদিনের আলোচনার বিষয় হবে।তবে,মাঝে মাঝে অনুমান করা যায়।গতকাল ছিলো আশুরা।ফলে আশুরার তাৎপর্য নিয়ে আমাদের মধ্যে উপস্থিত একজন জানতে চাইলো।যিনি জানতে চাইলেন, আমরা তাকে ১ম ব্যক্তি,যিনি উত্তর দিচ্ছেন তাকে আমরা ২য় ব্যক্তি এবং উপস্থিত অন্যজনকে ৩য় ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে রাখলাম। ২য় ব্যক্তি বলতে লাগলেন।আশুরা মূলত উদ্ যাপনের দিন,শুকরিয়া আদায়ের দিন।আল্লাহর রাসূল(সাঃ) এ-ই দিনকে উদযাপনই করেছেন।তিনি নিজে এ-ই দিন উপলক্ষে দু'দিন রোজা রেখেছেন।পবিত্র কুরআনে বর্ণিত মুসার নেতৃত্বে ইহুদীরা এ-ই দিন ফিরাউনের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছিলো বলে মনে করা হয়।ইসরাইলী তথ্যসূত্র থেকে এটি জানা যায় এবং এ-র সপক্ষে সহীহ হাদিস রয়েছে।তবে অনেক ইসলামি পণ্ডিত ইহুদী, নাসারাদের তথ্যের সূত্র অনুসরণ করে এ-ই দিনের মহত্ব ও গুরুত্ব সম্পর্কে বলে থাকেন। আশুরা মাল্টি কালচারাল ও মাল্টি-রিলিজিয়াস ধরনের উৎসব। এ-ই দিন ইহুদী, খ্রিস্টান ও ইসলাম এ-ই তিন ধর্মের মানুষ পালন করে থাকে।তবে মুসলমানদের মধ্যে এ-ই দিনকে উদযাপনের চেয়ে শোকের মাতমের মাধ্যমেই বেশি স্মরণ করা হয়।মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ, সংঘাত ও যুদ্ধ এ-ই দিনকে শোক ও দুঃখের দিন হিসেবে উপস্থিত করেছে।হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন(রাঃ) ও তাঁর পরিবারের সত্তরজন মানুষ (নারী ও শিশু) এজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছিলেন। এজন্য, মুসলমানদের মধ্যে শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ সহমর্মিতা ও শোক প্রকাশ করে,সূন্নী সম্প্রদায় মিল্লাদ মাহফিলের আয়োজন করে।কিন্তু আশুরার মূল শিক্ষা নিয়ে তেমন আলোচনা হয়না। ইতিহাসের অংশ হিসেবে শুধুমাত্র মুসা(আঃ) ও ফিরাউনের কাহিনী ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করলে আশুরার আলোচনা পূর্ণতা পায়।কিন্তু আলোচকদের আলোচনায় কাহিনী থেকে শিক্ষা লাভের বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যায়। মুসা(সাঃ) সাথে ফিরাউনের ক্ষমতার দ্বন্ধ ছিলো না।তার বিনীত নিবেদন ছিলোঃআল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ফিরাউনকে সতর্ক করা।ইজরায়েলের দাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়া, তাকে পবিত্র হওয়ার জন্য নম্রভাবে বলা,সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা।মুসা ফিরাউনের রাজত্বের অংশীদার হতে চায়নি।এ-ই সেই ফিরাউন যার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বহু বর্ণনা আছে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে,আশুরার আলোচনায় আমাদের আলোচনায় আসা উচিত আমরা কোন ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করছি; মুসা না ফিরাউন? ফিরাউন সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ৭৫ স্থানে উল্লেখ আছে।ফিরাউন বনী ইজরাইলদের ছেলেদেরকে হত্যা করতো,তাদেরকে কঠিন কষ্ট দিতো,নারীদেরকে বাঁচিয়ে রাখতো ; তাদেরকে ভয়ানক নির্যাতন করতো।সে নিজেকে যোগ্যতম ও একমাত্র শাসক হওয়ার অধিকারী হিসেবে মনে করতো।সে ছিলো খুবই অহংকারী।শাসক নামে সে ছিলো একজন জালিম।সে মিসর বাসীকে সকল প্রকার মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিলো। এখন আমাদের মধ্যেও ফিরাউনী বৈশিষ্ট্য সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান। এমন যদি হয়,তাহলে আমরা কিভাবে মানবিক সমাজ নির্মান করতে সমর্থ হবো? মানবিক সমাজ নির্মান করতে হলে মুসার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করা ছাড়া উপায় নেই। আশুরার শিক্ষা হচ্ছে এ-ই যে,আমরা মুসার কর্মপন্থা অনুসরণ করতে হবে।ন্যায়যুদ্ধে শহীদ হওয়া হজরত হোসাইন(রাঃ) -এর পথই অনুসরণ করতে হবে।শোককে শক্তিতে রুপান্তরের জন্য এ-ই দুজনের বৈশিষ্ট্য অর্জন করা আবশ্যক।

Printfriendly

Featured Post

জাতি নির্মাণে গল্পযোগ

  জাতি নির্মাণে গল্পযোগ   ১ ।   মানুষ সামাজিক জীব।তারা পরিবার গঠন করে।তারপর সে-ই পরিবার একটি গোষ্ঠীতে রুপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে একাধিক গোষ...