শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং এবং অন্যান্য

জন্মসূত্র উপেক্ষার বিষয় নয়; অহংকারের বিষয়। যারা জন্মসূত্রকে উপেক্ষা করে,তারা নিজেই উপেক্ষিত হওয়ার পথ সৃষ্টি করে।
    মাতা পিতা সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়।সন্তানদের অধিকাংশই ভুলে যায়,তারা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে? তারা সেখানে গিয়ে আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হবে,নিজেকে আগামী পৃথিবীর জন্য যোগ্য করে তুলবে,সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এক অনন্য সুন্দরের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করবে।কিন্তু জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংস্কৃতি চর্চার দৈন্যতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে গমনের লক্ষ্য অর্জন করা যাচ্ছে না। বর্তমানে, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যবিষয় ও পাঠ্যক্রম বিন্যস্ত হচ্ছে অতি সংকীর্ণ মানসিকতার উপর ভিত্তি করে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক বিষয় উপেক্ষিত। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের চিত্ত বিকাশের সুখ পাচ্ছেনা। তারা ভর্তির শুরুতেই ভবিষ্যতে বিত্তবান হওয়ার স্বপ্ন দেখে ; যা তাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়।তারা না পারে নিজেকে কিছু দিতে, না পারে পরিবারকে, না পারে দেশকে।তারা নিতান্ত আত্মকেন্দ্রিক বস্তুতে রুপান্তরিত হচ্ছে।
যাদের নিয়ে পরিবার গর্ব করে, সম্ভাবনা দেখে তারাই অচিরেই হতাশার কারণ হয়ে যাচ্ছে। এখানে এসে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঋদ্ধ করবে,সিদ্ধ পুরুষ হবে; এরকমই সকলের প্রত্যাশা থাকে।কিন্তু কোথায় যেনো ফাঁক থেকে যাচ্ছে!
এজন্য আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দু'একটা কোর্স অভিজ্ঞ অধ্যাপকগণ নেওয়া উচিত।মাত্র কৈশোর পেরুনো শিক্ষার্থী যেন তাদের চিত্ত বিকাশের আগেই চিত্তদাহের শিকার না হয়।কারণ,এরা বইয়ে মন না দিয়ে, মন বিনিময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তাদের এমন নির্বুদ্ধিতা সম্পর্কে কোর্সের শুরুতেই সতর্ক করা উচিত। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা কর্মজীবন,সংসার জীবন ও ধর্মীয় কাজে ব্যর্থ হয়েছে তারা সকলেই জ্ঞান-বিনিময় না করে মন বিনিময়েই কাল কাটিয়েছেন। এটা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যচ্যুতি।ফলে আমাদের ক্রিয়েটিভ কাজে যারা অগ্রসর তাদের অধিকাংশের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রির তকমা নেই কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনের জন্য তাদের কোন প্রকার অহংকারও নেই।এদেশকে যারা গার্মেন্টস শিল্পে উচ্চ স্থানে নিয়ে গিয়েছেন, তারা ক্রিয়েটিভ,স্বশিক্ষিত,আত্মবিশ্বাসী কিন্তু বেশিরভাগি উঁচু ডিগ্রিধারী নয়।এরা নিজেরা জাগ্রত।কারণ,তারা জন্মসূত্রকে স্মরণ করে, শ্রদ্ধা করে এবং মাতাপিতাকে বিশ্বাস করে; সাথে সাথে তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা দেয়।
অন্যদিকে, মুক্ত স্বদেশে অন্য এক ধরনের শিক্ষার্থী আছে,যারা পরিচয় সংকটে বিব্রত। বিব্রত আরো বহু ক্ষেত্রে।কিন্তু তারা চায় প্রতিষ্ঠা। এজন্য তারা কৌশলী পথে এগিয়ে যায়।আমাদের পরিচিত দু'চার জন্য আছেন,যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ব চুকানোর আগেই ঘর বেঁধেছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকানোর পরপরই বাঁধন চিহ্ন হয়ে যায়।এতে একপক্ষ তীব্র ঘৃণা ও আক্রোশ নিয়ে সরে যেতে হয়েছিলো। এখানে,সকল ক্ষেত্রেই নারী সঙ্গীই গুণে গুণে টাকা নিয়েছিলো। কিন্তু তাদের মাতাপিতা, অভিভাবক কেহই চায়নি , জীবনের শুরুতে তাদের সন্তানদের তেমনতর চিত্তদাহ আসুক।
যে লক্ষ্য নিয়ে ছেলে মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে,তাদের সেই লক্ষ্য অর্জিত হোক ; এই প্রত্যাশা করি।র্যাংকিং নিয়ে আমাদের ভাবতে হবেনা।১১/০৬/২০২২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Printfriendly

Featured Post

জাতি নির্মাণে গল্পযোগ

  জাতি নির্মাণে গল্পযোগ   ১ ।   মানুষ সামাজিক জীব।তারা পরিবার গঠন করে।তারপর সে-ই পরিবার একটি গোষ্ঠীতে রুপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে একাধিক গোষ...