রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

ভালবাসায় শিল্প ও শিল্পে ভালবাসা


ভালবাসায় শিল্প ও শিল্পে ভালবাসা

 

    ভালবাসা পৃথিবীর আদিমতম শব্দ।সমগ্র বিশ্বমণ্ডল সৃষ্টির সাথে এই শব্দটি যুক্ত;প্রতিটি মহৎ কর্মে এর উপস্থিতি অত্যাবশ্যক।এই অত্যাবশ্যক রূপটি তখনই যথার্থ হবে যখন এটি শৈল্পিক সৌন্দর্যে প্রকাশিত হবে।এটি তখনই সম্ভব যখন ভালবাসায় শিল্পের সৌন্দর্য থাকবে আর শিল্পের প্রতি প্রত্যাশিত ভালবাসার প্রকাশ ঘটবে।   । সৃষ্টিকর্তা  যখন মানব সৃষ্টি করেন,তখন তিনি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই আদমকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে তার গুণ  আরোপ করেছেন যাতে তাঁর সৃষ্টি তাঁকে বুঝতে পারে।এই বুঝতে পারার সাধনাই শিল্পীর কাজ।
      সাধারণের চেয়ে একটু আলাদা,একটু ভিন্নতর চিন্তা থেকে শিল্পের সূচনা।শিল্প নতুন সৃজন; তবে তা অনন্য।আমরা দিন যাপনে কত কাজ করি।তার সব কিছু শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয় না।শিল্প বৃত্তের বাইরে চিন্তা করা,একটু ঘুরে আসা অথবা একটু ঘুরিয়ে দেয়ার বাসনা;এই বাসনা থেকেই নিবেদক নিবেদনে নতুনত্ব আনতে চেষ্টা করে। আর যার বরাবরে নিবেদন সে নতুন শব্দে,  আচরণে বিমোহিত হয়;সক্রিয় প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
       গুণীজন বলেন,ভালবাসা একধরণের শৈল্পিক কারুকাজ ;এরজন্য বুদ্ধি প্রয়োজন।আমরা জীবনাচাররে  বহু কাজ করি ; যেগুলো শিল্পের মর্যাদা পেতে পারে।এই যেমন একজন রিক্সার ড্রাইভার ক্লান্ত শরীর নিয়ে যখন ঘরে ফিরে তখন বউয়ের জন্য কাগজ মুড়িয়ে একটা চামুচা বা সিংড়া নিয়ে আসাও একধরণের শৈল্পিক আচরণ। সে তার অজান্তেই শিল্পের উপাদান হয়।বায়েজিদ পানি এনে তার মাকে ঘুম থেকে জাগালে তা হতো সাধারণ আচরণ ;আর যখনি সে নির্ঘুম দাঁড়িয়ে রইল তা হল আলোচনার বিষয়।এই ভিন্নতাই শিল্প।এই জন্য আমরা পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে শিল্পিত জীবন চর্চা অনুসরণ করা উচিত।এর মধ্যদিয়ে মানুষের একাকীত্বের দুর্বহ কষ্ট দূরীভূত হয়।
       আমাদের পুরুষেরা সচরাচর পাকঘরে থালা বাসনে হাত দিইনা।কারণ,একে মেয়েলী ঘরানার অনিবার্য কাজ বলে মনে করি।কিন্তু এখানে যে পুরুষ হাত দেন, গিন্নির এলোমেলো চুলগুলো ঘুচিয়ে দেবার চেষ্টা করেন আর একটু মিষ্টি বকা খান;তিনি অন্যদের থেকে কিছুটা ভিন্ন;তিনিই শিল্পী।যদিও কেশগুচ্ছ নিয়ে ক্রীড়ারত ব্যক্তি ঘুচানো রন্ধনশালা এলোমেলো করে দেয়,তবুও তার মধ্যে ভালবাসামিশ্রিত  একধরণের শৈল্পিক আচরণ খুঁজে পাওয়া যায়।গিন্নীসমাজের এক্ষেত্রে ভিন্নমত থাকতেও পারে। সে যাক।রন্ধনে যেমন শিল্প আছে,ভোজনেও আছে।ভোজনে শিল্প না থাকলে তা হয় গলদকরণ। শিল্প বৃত্তের বাইরে হলেও আইনের বাইরে নয়।
        শিল্পী  নিজের মতো করে নিজেরে প্রিয় জনের কাছে উপস্থিত করে,নিজের ইচ্ছের সমুদ্রে ভালবাসার শব্দগুলোকে রং-রেখায়,শব্দে সাজাতে  বিভোর থাকে।নিজের শব্দকে সবার শব্দে রূপান্তরের প্রয়াসী হন।সার্বজনীন সত্যের প্রকাশক হিসেবে আভির্ভূত হন ।নতুন সভ্যতা বিনির্মাণে নিউরণে বিস্ফোরণ  ঘটায়;দেশকালের সীমানা নিশ্চিহ্ন হয়।এই অবিচ্ছিন্নতা শুধুমাত্র আরোপিত কাল্পনিক রেখার ক্ষেত্রে নয়;মানুষের মননে,মগজে সবখানে।আত্মগত এক প্রত্যাশিত বন্ধনে  শিল্পীরা বিশ্বব্যাপী এক অবিচ্ছিন্ন চিন্তায় ঐক্যবদ্ধ।এরা মানবতার মুক্তি প্রত্যাশী।  যেহেতু আমি কালে অন্তর্হিত সত্ত্বার স্বপ্নফেরি করা অভাজন,   আমি তাদের সাথেই অনুক্ষণ বিরাজিত। বন্ধনহীন সন্ধিতে বিশ্বাসী এসব ব্যক্তিসত্ত্বাই যথার্থ শিল্পী। কারণ,এরা একটু আলাদা,কিছুটা অন্যরকম

      ভালবাসায় শিল্পের উপস্থিতির কারণে মানুষ শিল্পের প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করে এবং শিল্পের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি হয়।শিল্পের প্রতি ভালবাসা একটি জাতির জীবনধারাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।কারণ,শিল্পের প্রতি আগ্রহ এর স্রষ্টার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণ হয়।বাংলাদেশে শিল্প ও শিল্পী কখনো যথার্থ মর্যাদা পায়নি।তার মানে এই যে আমরা জাতি হিসেবে এখনো শিল্পিত মননের অধিকারী হতে পারিনি। বর্তমানে দলীয় লেবাসে ঢাকা, ময়ূরের পেখম লাগানো গোষ্ঠীর সদস্যরাই শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে,প্রচার পাচ্ছে।অন্যদিকে, অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ শিল্পী আর্থিক সংকটে পড়ে শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছেন।প্রতিটি যুগে রাষ্ট্রই শিল্পীকে লালন করেছে;লালন করেছে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে।রাষ্ট্রকে অমরত্বের আসনে নিয়ে যায় শিল্পী।বর্তমানে গ্রীসের অতীতের রণশক্তির গৌরব নেই,কিন্তু তার জ্ঞানের গৌরবে ভাটা পড়েনি।আগামীতেও তা অভ্যাহত থাকবে  বাংলাদেশে অসম উন্নয়নের ফাঁদে পড়ে এর অক্ষয় সত্ত্বা শিল্পীসমাজ চরম অবহেলার শিকার হচ্ছে।
         শিল্পী তার চিন্তা দিয়ে রাষ্ট্রের ভিত্তি  নির্মাণ করেন ;আর এর কাঠামোগত রূপ দেন রাষ্ট্রের আইন প্রণেতাগণ।কিন্তু আইন প্রণেতাগণ যদি শিল্প না বুঝেন রাষ্ট্রের বিনির্মাণ কিভাবে সম্ভব হবে?

    বর্তমানে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের অধিকাংশ ব্যক্তি শিল্প বুঝেন না।ফলে তারা শিল্প ও শিল্পীর লালনে অক্ষম।শিল্পী এক অপরাজেয় সত্ত্বার নাম।তারা দলে থেকেও দলের ঊর্ধ্বে অবস্থান করেন।শাসক শ্রেণি যদি এটা বুঝতে অক্ষম হন তাহলে তা সমূহ ক্ষতির কারণ।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তা বুঝতেন;ফলে ভিন্ন মতের অধিকারী হলেও তিনি কবি ফররূখ আহমেদ কিংবা কবি আল মাহমুদকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শনে কার্পণ্য করেননি।বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চেষ্টা করছেন।কিন্তু যতটুকু মনে হচ্ছে  এক্ষেত্রে    তাঁর কর্মপরিধির বিস্তার সীমায়িত। সুযোগ সন্ধানীদের ভাগবাটোয়ারার খেলায় অনেক প্রতিভাবান দূরে পড়ে গেছে।সত্য হচ্ছে:রাজনীতির কূটচালে পড়ে জগৎবিখ্যাত শিল্পী সুলতানও তাঁর যথাযোগ্য সম্মান পাননি।যৌবনের যে সময়ে তাঁর  জাতিকে দেওয়ার সুযোগ ছিল, তিনি দেবার সুযোগ পাননি।রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে অবহেলায় পড়ে থাকা এসব তাপসদের রাষ্ট্রকেই খুঁজে নিতে হবে।তাদের চিন্তা ও কর্মকে প্রকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।তবেই রাষ্টের ভীত মজবুত হবে।2/25/18
                                                                          ------- 




বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

ঈশ্বরের কাছাকাছি মানুষেরা


ঈশ্বরের কাছাকাছি মানুষেরা

মানব সত্ত্বার ব্যতিক্রমী আর অনন্য একটা দিক হলঃমানুষ একই সাথে সৃষ্টি এবং স্রষ্টাফলে আল্লাহর সৃষ্টিকূলের মধ্যে মানুষ তাঁর প্রতিদ্বন্ধী সত্ত্বাদ্বারা বিরাজিত;ফলে তারা ঈশ্বরের কাছাকাছি যাওয়ার প্রত্যাশা করে কিংবা দাবী করে।ফলে মানুষ পরমেশ্বরের গুণে গুণাম্বিত ;মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হুওয়ায় তারা তাদের স্রষ্ট্রার গুণে গুণাম্বিত হওয়া অনিবার্য ছিল।তবুও যা যত সুন্দর তা সম্ভবত তত রহস্যময়।সন্দরকে তাত্ত্বিকভাবে  বিশ্লেষণ করে তৃপ্তি পাওয়া যায় না;এটাকে আলোচনার বিষয় হিসেবে রাখা যায়;আড্ডার সময়কে ইচ্ছেনুযায়ী প্রলম্বিত করা যায় মাত্র।কিন্তু স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অসম্ভব ।কারণ,সুন্দরের অনুভূতি আর অভিজ্ঞতা  ব্যক্তি নিরেপেক্ষ।
ঈশ্বর সর্বোত্তম সুন্দর।তিনি সর্বোত্তম গুণে গুনাম্বিত।তিনি তাঁর গুণ আর রং দ্বারা  তাঁর সেরা সৃষ্টি মানুষকে অভিষিক্ত করেছেন;তাতে রোবটের মত যথাযত সফটওয়্যার সেট আপ করেছেন।মানুষ যদি তাঁর গুণে নিজেদের গুনাম্বিত করে,তাহলে সেট আপ করা সফটওয়্যারসমূহ সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পায়  এবং তারা ঈশ্বরের কাছাকাছি  পৌঁছার  সুখ অনুভব করে। এটি এক অনিবর্চনীয় বোধের নাম;যা শব্দে প্রকাশ করা অসম্ভব।

মানুষ যখন ঈশ্বরের কাছাকাছি 

ঈশ্বর সুন্দরতম এবং তুলনারহিত।মানব প্রজন্মের মধ্যে যারা ঈশ্বরের গুণে গুনাম্বিত তারা মানুষের মধ্যে সুন্দরতম। এখন প্রশ্ন কারা সহজে ঈশ্বরের গুণে গুণাম্বিত হতে পারে?আমি মনে করি, এদের মধ্যে অন্যতম হল:চিকিৎসক, উকিল  ফাদার এবং স্বপ্নবিশারদ,শিক্ষক,লেখক আর অনিবার্য বন্ধনে আবদ্ধ মা-বাবা।মানুষকে যদি আল্লাহ তাআলার রোবটিক কর্মের একটি উপাদান  হিসেবে বিবেচনা করা হয়,তাহলে ডাক্তার সম্প্রদায় হচ্ছেন এই যন্ত্রের প্রধান কারিগর। এরা মূলত হার্ডওয়ার মেরামতে ভূমিকা রাখেন;যদিও হার্ডওয়ারের যথাযথ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের সাহায্য নেন।আদম সম্প্রদায়ের মনোপেশিজ অবস্থার  পরিপূর্ণ   কল্যাণের জন্য তাদের জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যারকে প্রয়োজনে আপডেট করা অনিবার্য। কারা এ দায়িত্ব পালনে অগ্রগামী এবং যথার্থ তা আলোচনা করা যাক।

যে মানুষ ঈশ্বরের কাছাকাছি:চিকিসক

মানুষের মধ্যে যারা সর্বাধিক নিরাপদ,মানুষের কল্যাণকামী, সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন তারা সহজে ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌঁছোবার আশা করতে পারেন।আমার মনে হয় বেশ কয়েক জাতের মানুষ আছেন যাদেরকে অপরাপর মানুষ ইচ্ছেয় হোক কিংবা অনিচ্ছেয় হোক নিরাপদ ভাবতে হয় এবং যৌক্তিক কারণে অপ্রকাশিত গোপন সত্য উন্মুক্ত করে দেয়। এদের মধ্যে অন্যতম হল:চিকিৎসক, উকিল  ফাদার এবং স্বপ্নবিশারদ।  এখানে উকিল পেশাগতভাবে কুটিলভাবে জ্ঞাত সত্যকে উপস্থাপন  করার প্রয়াস পান।এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্যের  সাথে মিথ্যার মিশ্রণ ঘটে।ফলে তাদের কুটিলতা অন্য অনেক নিরপরাধকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।এজন্য তাদের কাছে একটা গোষ্ঠী নির্ভয়ে সত্য প্রকাশ করলেও তারা ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌঁছতে অসমর্থ হন।এক্ষেত্রে চিকিৎসক সমাজ অগ্রগামী। তাদের কাছে নির্ভয়ে রোগীসমাজ তাদের অতি গোপনীয় বিষয়াদি প্রকাশ করেন।একজন রোগগ্রস্ত মানুষ যেসকল বিষয় তাদের অতি আপনজন মা,বাবা,স্বামী, স্ত্রী বা বন্ধুকে প্রকাশ করেন না, তা তারা সহজেই চিকিৎসককে বলে দেন।চোর যখন চুরি করে তখন সে ঈশ্বরের আশ্রয় প্রার্থনা করে।আর চুরি করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।যদিও তা হাঁস্যকর;তারা তাই করতে অভ্যস্ত। তারা ভাবে সে তিনিই নিরাপদ-যাকে সকল প্রকার গোপন সত্য নির্ভয়ে প্রকাশ করা যায়একজন রোগী যখন   চিকিৎসকের  শরণাপন্ন হন,তখন তিনি তাঁর ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতার দ্বারা তার অবস্থাকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন।রোগী তার সমস্ত বিশ্বাসকে একজন চিকিৎসকের কাছেই আমানত রাখেন।এইভাবে একজন চিকিৎসক পেশাগত কারণে পরম ঈশ্বরের আসন প্রাপ্ত হন।এমতাবস্থায় তিনি যদি আগত রোগীর সাথে চিন্তা ও কর্মে সততা বজায় রাখতে সমর্থ হন, তবে তিনি  ঈশ্বরের নিকটতম অবস্থানে অবস্থান করার সামর্থ লাভ করেন।আর যদি তিনি রোগীর সাথে উত্তম আচরণ করতে ব্যর্থ হন, তবে তিনি পরমেশ্বরের দয়াদ্র অবস্থান থেকে বিচ্যুত   হন।কারণ,ঈশ্বরের আসনে অবস্থান করে তাঁর গুণের প্রতিপক্ষীয় হলে নিশ্চয় তা ঈশ্বরকে বিক্ষুব্ধ করবে।ব্যক্তিগতভাবে আমি দু'চারজন চিকিৎসকে জানি যারা তাদের ঐশ্বরিক সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রাখতে সমর্থ হয়েছেন।এঁরা সরকারি হাসপাতালে যেমনি রোগীর সাথে  দয়াদ্র মানসিকতা বজায় রাখেন,তেমনি প্রাইভেট প্রাকটিসেও সেবার ব্রত পালন করেন।প্রাণ গোপাল দত্ত স্যার এবং তাঁর সহধর্মিণীর কথা অন্তত দু'জন রোগী আমাকে  বলেছেন।ডাক্তার শেঠীর কথাতো জগতবাসী  জানে।আমাদের মফস্বলে দয়াদ্র চিত্তের ডাক্তারের হঠাৎ আগমন ঘটলে তার থাকা কঠিন হয়ে যায়।ক্লিনিং বানিজ্যের কারণে বহু সৎ এবং উন্নত মননের অধিকারী ডাক্তার হয়রানির শিকার হন।একটা সময় ছিল যখন কোম্পানিগঞ্জে কোন গাইনী ডাক্তারের থাকা অসম্ভব হত।সকলেই নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন যে মন্দ মানসিকতার কর্তাদের কারণে এমনটি হত।যারা এমন করেন তারা আল্লাহর অভিশাপগ্রস্ত হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা থাকে।আবার অনেক ডাক্তার আছেন যাদের কাছে উপস্থিত হলেই রোগী নিজেকে ধন্য মনে করেন এবং তারা মানসিকভাবে রোগমুক্তির জন্য প্রস্তুত হন।ঈশ্বরের রোবটিক যন্ত্রে তারাই অস্র চালিয়ে থাকেন, প্রয়োজনে মেরামত করেন।এইভাবে তারা সৃষ্টিকর্তার অন্যতম সহযোগী হয়ে ওঠেন।অতএব তারা অবশ্যই নিজেদেরকে আল্লাহর রংএ রাঙাতে হবে।অন্যথায় তারা তাদের প্রাপ্ত আসনের অসম্মানই করবেন।

কোম্পানিগঞ্জে বেশ কয়েকজন ডাক্তার আছেন যারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে সবসময় চেষ্টা করেন বলে আমার মনে হয়েছে।   এদের মধ্যে দু'একজনের নাম না বললেই নয়;এরা হলেন :ডাক্তার ইমরোজ,ডাক্তার আবদুল হক,ডাক্তার মো:মুনিরুজ্জমান প্রমুখ। এরা তাদের ভুবনজয়ী হাঁসি দিয়ে রোগীদের অভ্যার্থনা জানিয়ে থাকেন।ডাক্তারের সহৃদয় ভূমিকার কারণে আমার প্রথম পুত্র  পৃথিবীর আলো দেখে  এবং   স্ত্রীরও হাঁসিমূখ বর্তমান থাকে।
 একজন রোগী চিকিৎসকের নিকটে তাঁর দেহের কষ্ট দূর করার ইচ্ছে নিয়ে আসেন;সাথে সাথে তিনি তার মনের ভার লাঘব করতেও চাহেন।এজন্য ডাক্তারের উচিত রোগীর মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করা।এক সময় বাংলাদেশের চিকিৎসক পেশার পাঠ্যক্রমে পারষ্পরিক   যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে জোরালো দৃষ্টি দেয়া হতো না।বর্তমানে এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
সমাজের সকল স্তরের জনগোষ্ঠী  একজন চিকিৎকের কাছে আসতে বাধ্য হন।সমাজের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা মূল্যায়নে একজন চিকিৎসক অধিকতর সুবিধা পেয়ে থাকেন।ফলে তারা সহজেই সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করতে সমর্থ।2/22/18
                                                                                      ---





হজরত মুহাম্মদ(সাঃ)-এর শিক্ষাদান পদ্ধতি ও কৌশল বইতে অন্তর্ভুক্ত   ২০২০ একুশে বইমেলা





মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রসঙ্গ: ডিজিটাল উপস্থিতির ধরণ ও যৌক্তিকতা

প্রসঙ্গ:  ডিজিটাল উপস্থিতির ধরণ ও যৌক্তিকতা

বর্তমানে ডিজিটাল উপস্থিতির বিষয়টি খুব আলোচিত হচ্ছে,মিটিং হচ্ছে।ইতোমধ্যে কোন কোন বিদ্যালয়ে ঘটা করে আঙুলের চাপ ব্যবহার করে এটি নেয়া হচ্ছে।আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে:মানুষের অদ্বিতীয়  সত্ত্বার অংশ হচ্ছে আঙুলের চাপ;এর যথেচ্ছ ব্যবহার ভবিষ্যতে বিবিধ সংকট সৃষ্টি করবে বলে আমার বিশ্বাস।
পৃথিবীর সর্বত্র  প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহ করা কার্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল হাজিরা নেয়া হয় এবং এটি সর্বজন স্বীকৃত। কোথাও কোথাও ক্যামরার মাধ্যমে কর্মীর উপস্থিতি দেখবাল করা হয়। কিন্তু উল্লিখিত ক্ষেত্রে মানুষের জন্মগত অদ্বিতীয় চরিত্রের অংশ যদি চাকুরীস্থলের উপস্থিতিতে ব্যবহার করা হয় তা অগ্রহণযোগ্য। সরকারের সবচেয়ে সংরক্ষিত স্থানে এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের নিরাপত্তা যেখানে হুমকীর মুখে, সেখানে স্থানীয়ভাবে নেয়া আঙুলের চাপে হাজিরা নেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত? বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।  আঙুলের চাপে হাজিরা নেওয়ার আইনগত দিকও আমাদের জানাতে হবে এবং জানতে হবে।এর অপব্যবহারের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা উচিত।বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।

বাংলাদেশেও  অল্পসময়ে অধিক সংখ্যক কর্মী বাহিনীর হাজিরা নেওয়ার জন্য কার্ডের মাধ্যমে হাজিরা নেয়া হয়।এটি যুক্তিযুক্ত।ডিজিটাল হাজিরা যদি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়,তাহলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতিতে করতে হবে এবং এটা সকলকে অনুভব করতে হবে।

রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

শ্রেণি পঠনপাঠনে সময় ও ক্লাস বণ্টন সংকট


শ্রেণি পঠনপাঠনে সময় ও ক্লাস  বণ্টন সংকট

শ্রেণি পঠনপাঠনে সর্বোচ্চ সাফল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষাবিদগণ বিবিধ পদক্ষেপ নেন।এরই অংশ হিসেবে ২০১২ সালে প্রকাশিত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের জন্য নির্দেশনা সমৃদ্ধ পুস্তক প্রেরণ করে;যেখানে সুনির্দিষ্ট পিরিয়ড এবং সময় উল্লেখ আছে।প্রথম পিরিয়ডের জন্য এক ঘণ্টা এবং বাকি পাঁচটি পিরিয়ডের জন্য পঞ্চাশ মিনিট করে বরাদ্ধ দেয়া হয়।এরই সূত্র ধরে বিগত বছরের নভেম্বর মাসে শিক্ষকের জন্য প্রতি বিষয়ের শিক্ষক গাইড প্রদান করা হয়।এতে পাঠপরিকল্পাসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।
         দীর্ঘসময় গেলেও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস রুটিন অনুসরণ করা  হচ্ছেনা।তবে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখানে  সমস্যা হল পাঠপরিকল্পনার সাথে  বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার  সমন্বয়হীনতা।পাঠপরিকল্পনায় প্রতি বিষয়ের জন্য যে সময় উল্লেখিত ছিল সে অনুযায়ী শ্রেণি পাঠদান অসম্ভব হচ্ছে।অধিকাংশ  মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নির্দেশিত ছয় পিরিয়ডে শ্রেণি পাঠদান করা হচ্ছে না।কারণ,ক্লাস শিডিউলে কোথায়ও সাত ঘণ্টা, কোথায়ও আট ঘণ্টা হিসেবে চলছে ফলে বরাদ্ধকৃত পঞ্চাশ মিনিটের পরিবর্তে ত্রিশ,  চল্লিশ বা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে নেমে আসে।অন্যদিকে পঠিত বিষয় বণ্টনে বৈচিত্র আনয়ন অসম্ভব হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকারি প্রধান শিক্ষকগণের অনেকে এই পদ্ধতিতে  যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না।এই জটিলতায়  শিক্ষামন্ত্রণালয় কতৃক প্রেরিত পাঠপরিকল্পনা ব্যবহার  অসম্ভব  হচ্ছে।যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত নির্দেশনা অনুসরণ করলে বরাদ্ধকৃত সময়ের   অধিকতর কার্যকর ব্যবহার করা সম্ভব হয় এবং অপচয় রোধ হয়।  
           যেহেতু সরকারি নির্দেশ ও নির্দেশনা অদ্যাবধি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না,সেহেতু সরকারের উদ্দেশ্য আলোর মুখ দেখছে না।আমরা মনে করি এই সংকট উত্তরণে নমুনা ক্লাস রুটিন সরবরাহ করা উচিত।পাশাপাশি প্রশাসনিক পদে কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করা উচিত।
                                                --



Printfriendly

Featured Post

জাতি নির্মাণে গল্পযোগ

  জাতি নির্মাণে গল্পযোগ   ১ ।   মানুষ সামাজিক জীব।তারা পরিবার গঠন করে।তারপর সে-ই পরিবার একটি গোষ্ঠীতে রুপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে একাধিক গোষ...