ঈশ্বরের
কাছাকাছি মানুষেরা
মানব সত্ত্বার ব্যতিক্রমী আর অনন্য একটা দিক হলঃমানুষ একই সাথে সৃষ্টি এবং
স্রষ্টা।ফলে আল্লাহর সৃষ্টিকূলের মধ্যে মানুষ তাঁর প্রতিদ্বন্ধী সত্ত্বাদ্বারা
বিরাজিত;ফলে তারা ঈশ্বরের কাছাকাছি যাওয়ার প্রত্যাশা করে কিংবা দাবী করে।ফলে মানুষ পরমেশ্বরের গুণে গুণাম্বিত ;মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হুওয়ায়
তারা তাদের স্রষ্ট্রার গুণে গুণাম্বিত হওয়া অনিবার্য ছিল।তবুও যা যত সুন্দর তা সম্ভবত তত রহস্যময়।সন্দরকে
তাত্ত্বিকভাবে বিশ্লেষণ করে তৃপ্তি
পাওয়া যায় না;এটাকে আলোচনার বিষয় হিসেবে রাখা যায়;আড্ডার সময়কে ইচ্ছেনুযায়ী প্রলম্বিত করা যায় মাত্র।কিন্তু স্বতঃসিদ্ধ
সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অসম্ভব ।কারণ,সুন্দরের অনুভূতি আর
অভিজ্ঞতা ব্যক্তি নিরেপেক্ষ।
ঈশ্বর সর্বোত্তম সুন্দর।তিনি সর্বোত্তম গুণে গুনাম্বিত।তিনি তাঁর গুণ আর রং
দ্বারা তাঁর সেরা সৃষ্টি মানুষকে
অভিষিক্ত করেছেন;তাতে রোবটের মত যথাযত সফটওয়্যার সেট আপ
করেছেন।মানুষ যদি তাঁর গুণে নিজেদের গুনাম্বিত করে,তাহলে
সেট আপ করা সফটওয়্যারসমূহ সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পায় এবং
তারা ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌঁছার সুখ অনুভব করে। এটি এক অনিবর্চনীয় বোধের নাম;যা
শব্দে প্রকাশ করা অসম্ভব।
মানুষ যখন ঈশ্বরের কাছাকাছি
ঈশ্বর সুন্দরতম এবং তুলনারহিত।মানব প্রজন্মের মধ্যে যারা ঈশ্বরের গুণে
গুনাম্বিত তারা মানুষের মধ্যে সুন্দরতম। এখন প্রশ্ন কারা সহজে ঈশ্বরের গুণে
গুণাম্বিত হতে পারে?আমি মনে
করি, এদের মধ্যে অন্যতম হল:চিকিৎসক, উকিল ফাদার এবং স্বপ্নবিশারদ,শিক্ষক,লেখক আর অনিবার্য বন্ধনে আবদ্ধ
মা-বাবা।মানুষকে যদি আল্লাহ তাআলার রোবটিক কর্মের একটি উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়,তাহলে ডাক্তার সম্প্রদায় হচ্ছেন এই যন্ত্রের প্রধান
কারিগর। এরা মূলত হার্ডওয়ার মেরামতে ভূমিকা রাখেন;যদিও
হার্ডওয়ারের যথাযথ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের সাহায্য নেন।আদম
সম্প্রদায়ের মনোপেশিজ অবস্থার পরিপূর্ণ
কল্যাণের জন্য তাদের জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যারকে
প্রয়োজনে আপডেট করা অনিবার্য। কারা এ দায়িত্ব পালনে অগ্রগামী এবং যথার্থ তা আলোচনা
করা যাক।
যে মানুষ ঈশ্বরের কাছাকাছি:চিকিৎসক
মানুষের
মধ্যে যারা সর্বাধিক নিরাপদ,মানুষের কল্যাণকামী,
সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন তারা সহজে ঈশ্বরের কাছাকাছি
পৌঁছোবার আশা করতে পারেন।আমার মনে হয় বেশ কয়েক জাতের মানুষ আছেন যাদেরকে অপরাপর
মানুষ ইচ্ছেয় হোক কিংবা অনিচ্ছেয় হোক নিরাপদ ভাবতে হয় এবং যৌক্তিক কারণে অপ্রকাশিত
গোপন সত্য উন্মুক্ত করে দেয়। এদের মধ্যে অন্যতম হল:চিকিৎসক, উকিল ফাদার এবং স্বপ্নবিশারদ।
এখানে উকিল পেশাগতভাবে কুটিলভাবে জ্ঞাত সত্যকে উপস্থাপন
করার প্রয়াস পান।এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্যের
সাথে মিথ্যার মিশ্রণ ঘটে।ফলে তাদের কুটিলতা অন্য অনেক নিরপরাধকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে।এজন্য তাদের কাছে একটা গোষ্ঠী নির্ভয়ে সত্য প্রকাশ করলেও তারা
ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌঁছতে অসমর্থ হন।এক্ষেত্রে চিকিৎসক সমাজ অগ্রগামী। তাদের কাছে
নির্ভয়ে রোগীসমাজ তাদের অতি গোপনীয় বিষয়াদি প্রকাশ করেন।একজন রোগগ্রস্ত মানুষ
যেসকল বিষয় তাদের অতি আপনজন মা,বাবা,স্বামী, স্ত্রী বা বন্ধুকে প্রকাশ করেন না,
তা তারা সহজেই চিকিৎসককে বলে দেন।চোর যখন চুরি করে তখন সে
ঈশ্বরের আশ্রয় প্রার্থনা করে।আর চুরি করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।যদিও তা
হাঁস্যকর;তারা তাই করতে অভ্যস্ত। তারা ভাবে সে তিনিই
নিরাপদ-যাকে সকল প্রকার গোপন সত্য নির্ভয়ে প্রকাশ করা যায়। একজন
রোগী যখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন,তখন তিনি তাঁর ঈশ্বরপ্রদত্ত
ক্ষমতার দ্বারা তার অবস্থাকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন।রোগী তার সমস্ত
বিশ্বাসকে একজন চিকিৎসকের কাছেই আমানত রাখেন।এইভাবে একজন চিকিৎসক পেশাগত কারণে পরম
ঈশ্বরের আসন প্রাপ্ত হন।এমতাবস্থায় তিনি যদি আগত রোগীর সাথে চিন্তা ও কর্মে সততা
বজায় রাখতে সমর্থ হন, তবে তিনি ঈশ্বরের নিকটতম অবস্থানে অবস্থান করার সামর্থ লাভ করেন।আর যদি তিনি
রোগীর সাথে উত্তম আচরণ করতে ব্যর্থ হন, তবে তিনি
পরমেশ্বরের দয়াদ্র অবস্থান থেকে বিচ্যুত হন।কারণ,ঈশ্বরের আসনে অবস্থান করে তাঁর গুণের প্রতিপক্ষীয় হলে নিশ্চয় তা ঈশ্বরকে বিক্ষুব্ধ করবে।ব্যক্তিগতভাবে আমি দু'চারজন চিকিৎসকে জানি যারা তাদের ঐশ্বরিক সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রাখতে
সমর্থ হয়েছেন।এঁরা সরকারি হাসপাতালে যেমনি রোগীর সাথে দয়াদ্র মানসিকতা বজায় রাখেন,তেমনি প্রাইভেট
প্রাকটিসেও সেবার ব্রত পালন করেন।প্রাণ গোপাল দত্ত স্যার এবং তাঁর সহধর্মিণীর কথা
অন্তত দু'জন রোগী আমাকে বলেছেন।ডাক্তার
শেঠীর কথাতো জগতবাসী জানে।আমাদের মফস্বলে দয়াদ্র
চিত্তের ডাক্তারের হঠাৎ আগমন ঘটলে তার থাকা কঠিন হয়ে যায়।ক্লিনিং বানিজ্যের কারণে
বহু সৎ এবং উন্নত মননের অধিকারী ডাক্তার হয়রানির শিকার হন।একটা সময় ছিল যখন
কোম্পানিগঞ্জে কোন গাইনী ডাক্তারের থাকা অসম্ভব হত।সকলেই নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন যে
মন্দ মানসিকতার কর্তাদের কারণে এমনটি হত।যারা এমন করেন তারা আল্লাহর অভিশাপগ্রস্ত
হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা থাকে।আবার অনেক ডাক্তার আছেন যাদের কাছে উপস্থিত হলেই রোগী
নিজেকে ধন্য মনে করেন এবং তারা মানসিকভাবে রোগমুক্তির জন্য প্রস্তুত হন।ঈশ্বরের
রোবটিক যন্ত্রে তারাই অস্র চালিয়ে থাকেন, প্রয়োজনে মেরামত
করেন।এইভাবে তারা সৃষ্টিকর্তার অন্যতম সহযোগী হয়ে ওঠেন।অতএব তারা অবশ্যই নিজেদেরকে
আল্লাহর রংএ রাঙাতে হবে।অন্যথায় তারা তাদের প্রাপ্ত আসনের অসম্মানই করবেন।
কোম্পানিগঞ্জে বেশ কয়েকজন ডাক্তার আছেন যারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে
সবসময় চেষ্টা করেন বলে আমার মনে হয়েছে। এদের মধ্যে দু'একজনের নাম না বললেই নয়;এরা হলেন :ডাক্তার ইমরোজ,ডাক্তার আবদুল হক,ডাক্তার মো:মুনিরুজ্জমান প্রমুখ। এরা তাদের ভুবনজয়ী হাঁসি দিয়ে রোগীদের
অভ্যার্থনা জানিয়ে থাকেন।ডাক্তারের সহৃদয় ভূমিকার কারণে আমার প্রথম পুত্র
পৃথিবীর আলো দেখে এবং
স্ত্রীরও হাঁসিমূখ বর্তমান থাকে।
একজন রোগী চিকিৎসকের নিকটে
তাঁর দেহের কষ্ট দূর করার ইচ্ছে নিয়ে আসেন;সাথে সাথে তিনি
তার মনের ভার লাঘব করতেও চাহেন।এজন্য ডাক্তারের উচিত রোগীর মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা
করা।এক সময় বাংলাদেশের চিকিৎসক পেশার পাঠ্যক্রমে পারষ্পরিক যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে জোরালো দৃষ্টি দেয়া হতো না।বর্তমানে এদিকে
বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
সমাজের সকল স্তরের জনগোষ্ঠী একজন চিকিৎকের কাছে আসতে বাধ্য হন।সমাজের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা
মূল্যায়নে একজন চিকিৎসক অধিকতর সুবিধা পেয়ে থাকেন।ফলে তারা সহজেই সমাজ পরিবর্তনে
ভূমিকা পালন করতে সমর্থ।2/22/18
---
হজরত মুহাম্মদ(সাঃ)-এর শিক্ষাদান পদ্ধতি ও কৌশল বইতে অন্তর্ভুক্ত ২০২০ একুশে বইমেলা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন