কোম্পানিগঞ্জের মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষার হালহকিকত
বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তি মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার আওতায় রয়েছে।মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা অর্জনকারীরাই দেশের একেবারে তৃণমূলে নিজকে কর্মে নিযুক্ত করেন এবং ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা প্রদানের মহান দায়িত্ব পালন করেন।তারা এই দায়িত্ব পালনে কতটুকু যোগ্য হয়ে উঠতেছেন এবং পালনে সমর্থ হচ্ছেন-তা কতটুকু আলোচিত হচ্ছে বা বিবেচিত হচ্ছে। আমার মনে হয়, এ বিশাল মানব শক্তি মানব সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।আমি এখানে কোম্পানিগঞ্জের মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষার অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করছি।
বাংলাদেশে মাদ্রাসা
শিক্ষা আলাদা ঘরানার;ঠিক যেমনটি টোল।টোলের ধরণে ভিন্নতা
নেই।মাদ্রসার ধরণে আকারে ব্যবস্থাপনায় প্রার্থক্য আছে।বাংলাদেশে অপরাপর অঞ্চলের মত
কোম্পানিগঞ্জে ছয় ধরণের মাদ্রাসার অস্তিত্ব আছে।এগুলো হল:এমপিও ভুক্ত
মাদ্রাসা, কওমি মাদ্রাসা,নুরানি মাদ্রাসা,নন-এমপিও ভুক্ত মাদ্রাসা,হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং ফোরকানিয়া মাদ্রাদা ।এমপিও ভুক্ত মাদ্রাসা
সরকারি শিক্ষাক্রমের আওতাভুক্ত দ্বিনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,কওমি
মাদ্রাসা সরকারি তত্ত্বাবধানের বাইরে ;এরা মূলত ভারতের
দেওবন্দ উলুমের অনুসারী। এর বাইরে আছে নন এমপিও মাদ্রাসা যারা সরকারি পাঠ্যক্রম
অনুসরণ করে, যদিও এগুলোর
একটিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত হয় না।এরা কেউই সরকারি স্বীকৃতি নেয় না;অন্যকোন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত
মাদ্রাসা থেকে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয়।অন্যদিকে, নুরানি মাদ্রাসায় পবিত্র কোরান শুদ্ধভাবে পাঠ করা শেখায়।হাফিজিয়া
মাদ্রাসায় পবিত্র কোরানের হিফজ তৈরি করে এবং ফোরকানিয়া মাদ্রাসা সামাজিকভাবে
পরিচালিত কোরান শিক্ষার প্রতিষ্ঠান।
মূলধারার
মাদ্রাসা হচ্ছে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিগঞ্জের প্রাচীনতম মাদ্রাসার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বামনী আছিরিয়া
ফাজিল মাদ্রাসা এবং বসুরহাট ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।এদুটো মাদ্রাসা বিংশশতাব্দীর
দ্বিতীয় দশকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।বহু আলেম এদুটো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা
অর্জন করে যশস্বী হয়েছেন।কিন্তু এসকল প্রতিষ্ঠান যুগের চাহিদা পূরণে কতটুকু ভূমিকা
রেখেছে?ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সেবাদান ব্যতীত সামাজিক,রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা
প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখতে সমর্থ হয়েছে কী?
ধর্মভীরু মুসলিম
জনগোষ্ঠী পরকালের তালাশে নিজ নিজ সন্তানকে মাদ্রাসায় ভর্তি করায়।কিন্তু বাস্তব
জীবনে এসে এদের অনেকে হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।আমি আমার যৌবনের উচ্ছল সময়ে
বামনী মাদ্রাসায় শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলাম।আমি আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এদের মধ্যে অধিকাংশই তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কে সংশয় আর অনিশ্চয়তায়
থাকে;যদিও এদের মধ্যে অনেকেই প্রচণ্ড মেধাবী।এর পেছনে
বহুবিদ কারণ রয়েছে।আমাদের আলোচনার প্রান্তদেশ এসে আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
এখন মাদ্রাসায় বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক।
প্রথমে এমপিও
ভুক্ত মাদ্রাসার দিকে নজর দিই। প্রথমত বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষায় লক্ষ্য নির্ধারণে
সংকোচন ঘটেছে।মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ প্রার্থনা করে।এটা সত্য যে এখানে ইহকালীন কর্মকাণ্ড পরকালীন মুক্তির পাথেয় হিসেবে
ভূমিকা রাখে।এখন প্রশ্ন হলো, ইহকালে আমাদের খেতে হয়,সংসার করতে হয়,প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে
থাকতে হয়;এজন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দুনিয়ার কল্যাণ করার
জন্যও শিক্ষা অর্জন করা আবশ্যক।কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষায় এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখা
যাচ্ছে না।কারণ মাদ্রাসায় শিক্ষা অর্জনকারী অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী দাখিল
পরীক্ষার পরে সাধারণ শিক্ষায় চলে যায়।আমার মনে হয়,মেধাবী
শিক্ষার্থীদের শতকরা ১০ জনও আলিম শ্রেণিতে ভর্তি হচ্ছে না।এ প্রসঙ্গে একটি বিষয়
উল্লেখ্য যে,কোম্পানিগঞ্জের কোন মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণিতে
বিজ্ঞান বিভাগ নেই এবং মেধাবীরাই মূলত বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়।একজন শিক্ষার্থী
পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইহকালে জীবন জীবিকার জন্য দক্ষ হয়ে উঠা আবশ্যক।আমি এরকম
কয়েক জনকে চিনি যারা দাখিল পাশের পরে কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে।পরবর্তিতে
তারা মানবিক বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছে।
তবে এদের মধ্যে যারা দাখিল
পাশের পরে দেশের কোন খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তাদের জীবনের বাঁক ইতিবাচক দিকে
পরিবর্তিত হয়েছে।
বিশেষ করে তামির উল মিল্লাত তে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী
ব্যক্তি জীবনে বহুমূখী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে।আমার এক প্রাক্তন ছাত্র একটি
খ্যাতিমান মাদ্রাসায় আলিমে ভর্তি হওয়ার পরে আমাকে বলেছিল:স্যার,
দশ বছরে আরবি ব্যাকরণ
যা শিখিনি,একটিমাত্র ক্লাসেই
তারছে বেশি আত্মস্থ করেছি।
ব্যক্তিজীবনে আমি অনেক
মেধাবী ছাত্রকে দেখেছি তারা আলিম বা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে ফাজিল বা কামিল
পড়ার দিকে অগ্রসর হয়নি।আবার অনেককে দেখেছি যে তারা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ফাজিল
বা কামিল ডিগ্রি অর্জন করছে।কিন্তু কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে
অধিকতর যোগ্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত
করতে ব্যর্থ হচ্ছে। চাকুরীর ক্ষেত্রে এরা খুবই
সংকটে পতিত হচ্ছে।এদের অনেকে একই সেশনে একাধিক ডিগ্রি নেয়ার প্রবণতা রয়েছে;যা শিক্ষাবর্ষ বিবেচনায় অযৌক্তিক।
দ্বিতীয়ত শিক্ষার গুণগত
মানের অবনতি মাদ্রাসা শিক্ষাকে সংকটে ফেলে দিয়েছে।বিশেষ করে কোম্পানিগঞ্জের প্রায়
সকল মাদ্রাসায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইসলামি ছাত্র শিবির প্রতিষ্ঠিত ছাত্র
সংগঠন। বিকল্প কোন দলের অনুসারীর উপস্থিতি
এখানে নেই।ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ব্যতীত দেশের সর্বত্রই এমন অবস্থা বিরাজমান ।অধিকাংশ শিক্ষকের সাথে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে ;তাঁরা দলের নেতা অথবা মন্ত্রণাদাতা।ফলে শিক্ষার্থীদের কারোই এই বৃত্তের
বাইরে গিয়ে চিন্তা করার সুযোগ হয় না।
প্রতিষ্ঠানের সংখ্যার আধিক্য:কোম্পানিগঞ্জে ছাত্র সংখ্যার বিচারে মাদ্রাসার
সংখ্যা বেশি।কোম্পানিগঞ্জে সাধারণ মাদ্রাসার
সংখ্যা ১৪(চৌদ্দ )। অন্যদিকে,মাদ্রাসা মানেই আলিম ক্লাস
থাকা যেন আবশ্যক।ফলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আলিম ক্লাস চালু করতে আগ্রহী। কারণ
ব্যাখ্যা করে লাভ নেই।যারা লেখাটি পড়ছেন,তারা নিশ্চয় সত্য
আবিষ্কার করতে সক্ষম হবেন।অথচ মাত্র তিনটি মাদ্রাসায় দাখিল স্তরে বিজ্ঞান বিভাগ
আছে।উল্লেখ্য যে, শতাব্দী প্রাচীন বামনী আছিরিয়া সিনিয়ার
মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগ নেই। অনেক মাদ্রাসায় সাত
আটজন শিক্ষার্থী নিয়ে আলিম ক্লাস শুরু করে। নব্বইয়ের দশকে আট জন ছাত্রের জন্য
আট-দশজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হত ;এসব নিয়ে প্রচুর আলোচনা
সমালোচনা হত।শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের দুর্নীতিবাজ চক্র এসব কাণ্ড অবলীলায় করে গেছে।
বর্তমানে ছাত্র সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখার মান
অসন্তোষজনক। মাদ্রাসাসমূহে অতিপ্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক সরাঞ্জম নেই,প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই;বিশেষ করে গণিত এবং
পদার্থ-রসায়নের শিক্ষকের খুবই সংকট।আর এটা সত্য যে,মাদ্রাসার
সুপার বা অধ্যক্ষ হতে গেলে শিক্ষায় ডিগ্রিলাভের কোন শর্ত নেই।অথচ উন্নত
শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষাদান পদ্ধতি বা কৌশল জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।অথচ
মাদ্রাসার ক্ষেত্রে এটি বাস্তবায়ন করা হয়নি ;বরং উপেক্ষা
করা হয়েছে।এপ্রসঙ্গে একটি কথা বলার আবশ্যকতা অনুভব করছি।
সরকার সাধারণ স্কুল কলেজে
শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষক-শিক্ষিকার আবশ্যকীয় অনুপাত বজায় রাখে;কিন্তু মাদ্রাসায় এটি নেই।বিশেষ করে ইবতেদায়ী পর্যায়েও তা মানা হয়
না।একজন শিক্ষকের সাথে আলোচনা করলে তিনি বলেন,এদের বারো
মাসে তের পার্বণ ;শরীর অসুস্থ থাকে।কোরান শিক্ষক হিসেবে
নিয়োগ দিলে তারা দায়িত্ব পালনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে।অথচ বর্তমানে মাদ্রাসায় প্রায়
অর্ধেকের কাছাকাছি মেয়ে শিক্ষার্থী পড়া লেখা করে।
মাদ্রাসাসমূহ ইসলামি শিক্ষাকে ধারণ করতে সমর্থ হলে ইসলামের স্বর্ণযুগের মত
সোনার মানুষ তৈরি হত।এরা জ্ঞান বিজ্ঞানে বিশ্বব্যাপী
প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হত।সারা পৃথিবী এদের গবেষণার দ্বারা উপকৃত হত ।ইবনে খালদুন,ওমর খৈয়াম,ইমাম গাজ্জালীর মত মনীষীর জন্ম
হত।মাদ্রসাসমূহে গবেষণার পথ সংকুচিত।
এমপিও ভুক্ত
মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ সীমিত।সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অস্তিত্ব
নেই বললেই চলে।আগেকার মত জলসার প্রচলন নেই।হাইস্কুলগুলোতে এর প্রচলন অনেক আগেই
রহিত করা হয়েছে।ফলে কোম্পানিগঞ্জের কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয়েই বৃহিস্পতিবারের
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়মিত হয় না।এসব কাজে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়া হয় না।
এখন বাদবাকি মাদ্রাসার
প্রসঙ্গে আসি।সাধারণ মাদ্রাসার কাতারে আরো যেসব মাদ্রাসা আছে, এগুলো হল নন-এমপিও ভুক্ত(যারা সরকারি স্বীকৃতি চায়),নন-এমপিও ভুক্ত(যারা এমপিও চায় না)। কোম্পানিগঞ্জে নন-এমপিও ভুক্ত(যারা
এমপিও চায় না) মাদ্রসা বেশ প্রভাবশালী।এ রকম মাদ্রসার সংখ্যা আট দশটার কম
নয়।এগুলোর বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে চালু হয় এবং প্রায় সবগুলো দশম শ্রেণি পর্যন্ত
চালু আছে।এরা অন্য কোন সরকার স্বীকৃত মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করে।এদের প্রতিষ্টানসমূহের অভ্যন্তরে কী হচ্ছে
শিক্ষা বিভাগের কেউ জানে না;শিক্ষার্থী বা শিক্ষকের বেতন
ভাতা কোন নিয়মে গ্রহণ বা প্রদান করা হয়, তা কারো জানবার
দরকার হয় না;অন্যান্য মাদ্রাসার মত আউট ডোর ক্রীড়ার
অস্তিত্ব এখানেও বিলুপ্তপ্রায়।শিক্ষার্থীদের প্রচুর বিদ্যা গেলানো হয়।এখানে
যান্ত্রিক নিয়মে সব চলে।বন্ধের বালাই নেই।এ সকল মাদ্রাসার প্রায় সকলেরই হোস্টেল
সুবিধা আছে।অন্যান্য খরচ ব্যতীত শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নুন্যতম পাঁচশ টাকা।
অভিভাবকদের কাছে এ সকল মাদ্রাসা খুবই জনপ্রিয়;নচেৎ
ছোটখাটো মফস্বল শহরে ছয়-সাতটা মাদ্রাসা ছলমান থাকা অসম্ভব হত।
অন্যদিকে,গ্রামের আনাচেকানাচে, পুকুরপাড়ে,খালপাড়ে বহু নূরানি মাদ্রাসা
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।নূরানি মাদ্রসার দাপটে অনকে স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছেনা । পাশাপাশি রয়েছে প্রথাগত হেফজখানা।এখানে শিক্ষার্থীদের পবিত্র কোরান হেফজ
করানো হয়।
বেশ জৌলুসপূর্ণ
অবস্থায় আছে কওমি মাদ্রাসাগুলো।এখানে দূরদূরান্তের শিক্ষার্থীরা উচ্চতর শিক্ষা
অর্জন করে।এসকল প্রতিষ্ঠানে পবিত্র কোরান,হাদিস, ফিকাহসহ ধর্মীয় বিষয়াদির পাঠদান করা করা হয়।বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়াবলী
কিংবা গণিতের পাঠদান করা হয় না। দরিদ্র পরিবারের শিশুরা
এখানে পড়তে আসে।অনেক শিশু নিষ্ঠুরতম শাস্তির কারণে মাদ্রাসা ছাড়তে হয়। মাঝেমধ্যে
এদের নিয়ে পত্র পত্রিকায় লেখালেখি হয়।এসকল প্রতিষ্ঠান শতভাগ আবাসিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায়
শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক শুদ্ধতা হুমকীর মুখে পড়ে।এসব নিয়েও প্রায় পত্রিকায় সংবাদ
আসে।এরা স্থানীয় বিত্তবান এবং বিদেশি সাহায্য পেয়ে থাকে;কিন্তু
এদের আয় ব্যয়ের সরকারি অডিট হয় না।তবে এখান থেকে
অনেকে হিফজ সমাপ্ত করে সাধারণ মাদ্রাসা শিক্ষায় চলে আসে।
অসচেতন মাতা পিতার পরকালীন
মুক্তির লক্ষ্যে তাদের সন্তানেরা উৎসর্গিত হয়।এসব
প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য,রাজনীতি,অর্থনীতি, দর্শন, গণিত,
বিজ্ঞান এবং আইসিটি পঠনপাঠনের ব্যবস্থা নেই।বাংলাদেশের সর্বত্র বিস্তারিত
এসব কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে
বিশ্বাসযোগ্য কোন গবেষণাও নেই।
মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা এদেশের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।এর যথাযথ উন্নয়ন পুরো
জাতীর উন্নয়নকে গতিশীলতা দান করতে পারে।তাই, যত দ্রুত
সম্ভব মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী শিক্ষাধারায় নিয়ে আসতে হবে।যে দুর্বল,
সে যুক্তিহীন ; সে হিংস্রতার
জন্মদাতা।অতএব একটি বিশাল শিক্ষার্থীগ্রুপকে দুর্বল করে রাখা মোটেই সুবিবেচনার কাজ
নয়।3/17/18
----
হজরত মুহাম্মদ(সাঃ)-এর শিক্ষাদান পদ্ধতি ও কৌশল বইতে অন্তর্ভুক্ত ২০২০ একুশে বইমেলা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন