চাঁদ সওদাগর:বাঙালির মিথিকাল চরিত্র
চাঁদ সওদাগর বাঙালির মিথিকাল চরিত্র।আমরা বেহুলা লক্ষিন্দরের কাহিনী নিয়ে সিনেমা দেখেছি।কেঁদে চোখের জল ফেলেছি।কিন্তু কাহিনীর পেছনের গল্প বা উদ্দেশ্য চাপা পড়ে থেকেছে। চাঁদ সওদাগর মনসাকে পুজো দিলেন না।ফলে তিনি তার সাত সন্তানকে হারালেন,পুত্রবধুরা বিধবা হল।তিনি ও তার স্ত্রী অসহনীয় কষ্ট পেলেন।তিনি শুধু শুধু কেন তার সাত সন্তানকে হারাবার ঝুকি নিলেন!
কাহিনীর মূলে আছে আধিপত্যবাদী চরিত্র মনসা।মনসা চাঁদ সওদাগরের কাছে পুজো দাবি করে।পুজো না দেওয়ায় মনসা একে একে তার সাত পুত্রকে দংশন করে। ফলে তারা মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।এখানে মনসা শোষণকারী পক্ষের প্রতিনিধি।চাঁদ সওদাগর শোষক আর আধিপত্যবাদীর ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়নি।কারণ,মাঝাভাঙ্গা-কুঁজো, বন্য আর গর্তবাসি মনসার মানবজাতিকে শাসনের কোন অধিকার নেই।মানুষ সৃষ্টির সেরা।তাই, চাঁদ সওদাগর এটিই মানতে চাননি। এটি ছিল তার অপরাধ।
চাঁদকে সবশেষে আপোষ করতে হয়েছিল;বিধবা পুত্রবধুদের ক্রন্দন আর অসহায়ত্ব তার অন্তর ছুঁয়েছিল।ফলে নিরুপায় হয়ে তিনি কুঁজোকে পুজো দেন।তবে তার শর্ত ছিল:তিনি বাম হাতে পিছনে নিক্ষেপ করে পুজো দিবেন। মনসা তাতেও রাজি হল ।তার অপমানবোধ নেই।কারণ,সে তো মানুষ নয়।অশিক্ষিত, মূর্খ একটা জানোয়ার।চাঁদের নিক্ষিপ্ত ফুলতো দর্শনীয় বস্তু।এটিই যথেষ্ট।
কোম্পানিগঞ্জে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলায় কোম্পানিগঞ্জ কবিতা পরিষদের কাব্য আলক্ষ্যে আমরা নব রূপায়নে চাঁদ সওদাগরের ব্যক্তিসত্তাকে উপলক্ষ করে একটি পুঁথি পাঠের আয়োজন করেছিলাম।তরুণ আবৃত্তিকার সাইফুল ইসলামের দল এটি উপস্থাপন করেছিল।পুঁথিটি আমি লিখেছিলাম।3/8/18
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন