বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮

রাজাকার শব্দের ব্যবহারে রাজনীতি

রাজাকার শব্দের  ব্যবহারে রাজনীতি


বাংলাদেশে সুবিধাবাদীদের দৌরাত্ম্য অপ্রতিহত গতিতে অগ্রসরমান।বিশেষ করে রাজাকার শব্দের অনৈতিক ব্যবহার। যখন যেখানে ব্যবহার করা যায়,ব্যবহৃত হচ্ছে।আর মিডিয়া,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যাচ্ছেতাই তা ব্যব্যহার করছে;কোন বাছবিচার নেই।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সুবিধাবাদী শব্দ হচ্ছে:রাজাকার।অবস্থা এমন যে,যারা সক্রিয় রাজনীতি করেন না তারাও এই শব্দদিয়ে আক্রান্ত।এই শব্দের অন্যায্য ব্যবহারে মহাজোটের কর্মী বা নেতারা প্রথম সারিতে।তাদের সমালোচনা করলেই হলো;আর রক্ষা নেই।
সাথে সাথে এটাও দেখা যায় যে,অত্যন্ত সৎ এবং কর্মঠ সরকারি কর্মকর্তাগণও এই নিন্দনীয় শব্দ দিয়ে আক্রন্ত হচ্ছে।এদের মধ্যে অনেক কর্মকর্তা আছেন,যাদের মাতাপিতা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।জোট সরকারের অন্যায়ের সাথে আপোষ না করলে কারণে অকারণে তারা হয়রানির শিকার হন,বিভাগীয় সুবিধা থেকে তাদের অযৌক্তিকভাবে বঞ্চিত করা হয়।খ্যাতিমান ব্যাংকার সিরাজী সাহেব সাহসী কর্মের জন্য দীর্ঘদিন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।অথচ যারা তাকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করেছে তাদের বিচার হয়েছে কি?তা অজ্ঞাত।যতটুকু জানি তারা সবাই দেশপ্রেমিক হয়েছে;অতএব তাদের কিছুই হবে না।
দেশের বিপুল পরিমান অর্থ যারা লুট করে নিয়ে গেল তারা কি দেশ প্রেমিক? এখন রাজাকার শব্দের পারিভাষিক অর্থকে অধিকতর বিস্তৃত করা প্রয়োজন।দরকার হলে এরজন্য আইন করা হোক।যারা দেশকে ঠকাবেন,অন্যায়কে ন্যায় বলে চালাবেন, দুর্নীতি করবেন ,বিনাভোটে নির্বাচিত হবেন,সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করবেন তারা সবাই রাজাকার।
বাংলাদেশের অধিকাংশ খ্যাতিমান রাজনীতিবিদের অতীত ইতিহাস তালাশ করলে দেখা যায় তাদের অধিকাংশের পূর্বপুরুষ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্থানপন্থী ছিল অথবা নীরব ছিল।কারণ,মুসলিম লীগ থেকে সরে আসার মত সাহসিকতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।কিন্তু তাদের উত্তর প্রজন্ম :সন্তান,নাতি-পুতি তাদের সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করেনি।তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।এটিই বাস্তবতা।
এখন সমস্যা হল:রাজাকারপুত্রদের মধ্যে যারাই জোট সরকারের সাথে ভিন্নমত প্রকাশ করেন তারাই সংকটাপন্ন। বিএনপি তে প্রচুর মুক্তিযোদ্ধা আছেন,দেশের জন্য যাদের অবদান অবিস্মরণীয়।কিন্তু তারাও নিন্দাবাক্যে আক্রান্ত হচ্ছেন।ইমরান এইচ সরকার যখন সরকারের সহযোগী হল,তখন সে বীরপুত্র।যখনই সে সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করলো তখনই সে রাজাকার পুত্র-নাতি হয়ে গেল।
আজ দেশ উন্নয়নশীলের কাতারে প্রবেশের স্বীকৃতি পেল।এখন বিভেদের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা দরকার।দরকার সকল চোর বাটপারদের রাজাকার হিসেবে অভিহিত করা।সুবিধাবাদী চরিত্রের মানুষদের দেশের দায়িত্ব দেয়া যাবে না।উন্নত দার্শনিক চিন্তায় সমৃদ্ধ হয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।নচেৎ যে কোন সময় অনুত্তীর্ণ সমস্যায় পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।3.21/18
                               ----

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Printfriendly

Featured Post

জাতি নির্মাণে গল্পযোগ

  জাতি নির্মাণে গল্পযোগ   ১ ।   মানুষ সামাজিক জীব।তারা পরিবার গঠন করে।তারপর সে-ই পরিবার একটি গোষ্ঠীতে রুপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে একাধিক গোষ...