নাম পরিবর্তনের সংস্কৃতি
একটা নাম ইতিহাসের অংশ।পাকিস্তান সৃষ্টির পরে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির তকমা দিয়ে বিভিন্ন স্থান ও স্থাপনার নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চলেছিল। সাধারণ মানুষ একে ভালো মনে মেনে নেয়নি।বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরে যৌক্তিক কারণে, শোষক শ্রেণির চিহ্ন মুছে দেওয়ার প্রত্যয়ে বেশ কিছু স্থাপনা ও স্থানের নামে পরিবর্তন আনা হয়।তখন এর বিরুদ্ধে কিছু বলার সুযোগ বা সাহস কারো ছিলো না।কিন্তু বর্তমানেও বিভিন্ন রাজনীতিবিদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে থাকেন।আমরা মনে করি,নাম পরিবর্তনের পেছনে যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করা প্রয়োজন। কারণ, নামের পরিবর্তন একটা জাতির নৃতাত্ত্বিক সূত্রকে গায়েব করে দিতে পার।
এখন,নামের পরিবর্তন নিয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।কোম্পানিগঞ্জের একটা পুরোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে,রামপুর ফকিরের হাট বজলের রহমান মডেল প্রাইমারী স্কুল।এটি বর্তমানে রমিজ উদ্দিন হাজী বাড়ির দরোজায়।বিগত শতাব্দীর প্রথম দিকে এটি বর্তমান রংমালা মাদ্রাসার পশ্চিম পাশে ছিলো।সেখানে ফকিরের হাট নামে একটা বাজার ছিলো। ছোট ফেনী নদীর ভাঙ্গনে পড়লে একে সরিয়ে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করা হয়।যাই হোক।যেহেতু,উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন ভিক্ষুক; তিনি ভিক্ষা করেই এটি প্রতিষ্ঠা করেন।নিজের পৈতৃক ভূমি দান করেছিলেন।এখনও সে জমি বিদ্যালয়ের নামেই আছে।কিন্তু বছর কুড়ি আগে একটা গোষ্ঠী এই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের তোড়জোড় শুরু করেন।শিক্ষা বিভাগের কর্তাগণ এর প্রতিষ্ঠার পেছনে সত্য জেনে নাম পরিবর্তন প্রত্যাশী দলকে তিরস্কার করেন।এজন্য,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের আয়োজন যেন অতীতের নিবেদিতপ্রাণ মানুষের অবদানকে উপেক্ষার কারণ না হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন