শ্লোগানে নারী ক্ষমতায়ন ও বাস্তবতা
আজকাল নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে অধিকতর আলোচনা হচ্ছে।নারীর ক্ষমতায়নের স্বর্গদ্বার এই বাংলাদেশ;আমরা নারীর ক্ষমতায়নের চূড়ান্ত সীমার কাছাকাছি আছি।এখন প্রয়োজন অর্জিত ক্ষমতাকে উপভোগ করা।এটি কিভাবে সম্ভব?
ক্ষমতার সাথে
ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে পৌরষের।পৌরষ পরম পুরুষের গুণে গুণাম্বিত।যার ক্ষমতা যত কম ,তার পৌরষ তত কম।ফলে ক্ষমতায়িত নারী পরম পুরুষের
প্রতিনিধি।এই কারণে ক্ষমতার উচ্চস্তর পুংলিঙ্গ।
তবে খুব
ব্যতিক্রম ছাড়া (?)স্তরবিন্যাসে
নারীর ক্ষমতা নিকটতম ক্ষমতাবান পুরুষের ক্ষমতায় বিরাজিত এবং অন্তর্হিত।নিকটতম
পুরুষ যদি স্ব স্ব ক্ষেত্রে ক্ষমতাহীন হন,নারীও হন অবহেলিত।হৈমন্তীর স্বামী অর্থহীন আর অথর্ব
হওয়ায় হৈমন্তী অবহেলা ,অযত্ন আর
অবিচারের শিকার হন;তিনিও হন অক্ষম।
পরম পুরুষ
সর্বময় ক্ষমতাধারী।যারাই ক্ষমতাধর তারা পরম পুরুষের প্রতিনিধি।সংসার জীবনের
যূথাবদ্ধযাত্রায় দুয়ের সুষম সমন্বয় আর সহযোগিতা পরষ্পরকে ক্ষমতাবান করে;সে ক্ষেত্রে দুজনই পুরুষ সত্ত্বার দ্বারা অভিষিক্ত
হন।ফলে কোন সমাজে এককভাবে ক্ষমতায়ন অসম্ভব।পরিবারে পুরুষ সদস্য তার সক্ষমতা
প্রমাণে সমর্থ হলে নারীও সে স্বাদ অনুভব করেন।কিন্তু নারী সদস্য তার প্রভাব ও
ক্ষমতার প্রয়োগে অগ্রগামী হলে ক্ষমতায়নে অসম অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং পারষ্পরিক
যৌথযাত্রায় ভাঙ্গন অনিবার্য হয়;এই ভাঙ্গন শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকে ঘটে।ফলে অনৈক্যের কারণে ক্ষমতায়ন
তাদের সক্ষমতাকে অক্ষমতায় রূপান্তরিত করে।
পরবর্তী
প্রজম্মের বিকাশে জনসমষ্টির সক্ষমতা ইতিবাচক প্রভাব রাখে;কিন্তু সক্ষমতাকে যদি ক্ষমতায়নের সমার্থক হিসেবে আমলে
আনা হয় –তাহলে সব বরবাদ
হবে।কিন্তু বর্তমানে এমনটিই ভাবা হচ্ছে।আমরা আমাদের উন্নয়নের জন্য কতটুকু
প্রস্তুতি নিচ্ছি-তার হিসেব মিলানো দরকার।আগামী একদশক পরে আমরা আমাদেরকে উন্নত অবস্থানে দেখতে চাই;এবং এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।কিন্তু বাস্তবতা কী –তা বিবেচনায় আনা দরকার।উন্নত অবস্থানে যেতে প্রয়োজন
জ্ঞাননির্ভর একটি জনগোষ্ঠী।কিন্তু বাস্তবে তার লক্ষণ নেই।বর্তমানে চাকুরীজীবি
শিক্ষিত দম্পতি একাধিক সন্তান নিতেও আগ্রহী নন।আমাদের পরিচিত পরিমণ্ডলে এটি প্রায়
শতভাগ উপস্থিত।অন্যদিকে,পিছিয়ে পড়া
জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে উল্টো ;তারা যথাসম্ভব
তিনের অধিক সন্তান নিচ্ছেন।
ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে সুবিবেচক,সামর্থবান ও ক্ষমতায়িত যুগলের বিকল্প নেই;তারাই সহজে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগী হতে
পারবে।অন্যদিকে,বর্তমান সরকারের
কর্মকাণ্ড অনুভব করতে হলেও ভাল রকমের শিক্ষা দরকার।অতএব সক্ষমতা আর ক্ষমতায়নের
দ্বন্ধ ঘুচানো দরকার।
আমারা ক্ষমতায়িত
নারীর প্রবল স্রোতে যেন হারিয়ে না যাই;আমাদের যশস্বী প্রজম্মের আগমন সুগম হবে –এই প্রত্যাশা করি।অন্যথায় দশক পরে আমাদের কাজ চালানোর
জন্য জনশক্তি আমদানি করতে হবে।10/17
10/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন