প্রধান
শিক্ষকের আত্মকথা:পর্ব-৪
খড়ের গাঁদায় আগুন
ওলিউল্যা
স্যার অন্যজাতের মানুষ।মাঝেমাঝে কিছু কথা বলেন যাতে মনে হয় আমাকেই ঘাঁটাচ্ছেন।
পরক্ষণেই দেখি না,তিনি তার স্বাভাবিক কাজই করছেন। স্কুলে এস এস সি
টেস্ট পরীক্ষা চলছে।শিক্ষকদের অনেকেই একটু আগে বাগে এসেছিলেন।তিনি হঠাৎ প্রশ্ন
করলেন,আপনারা কখনো কী খড়ের গাঁদায় আগুন দেখেছেন?
আমারা তাঁর হঠাৎ করা প্রশ্ন বুঝুতে চেষ্টা করছি।আবার তিনি বললেন,যেদিন খড়ে আগুন লাগে সেদিন দু'টো ঘটনা
ঘটে।শুনুন। খড়ের গাঁদা থাকে বাড়ির সীমানার বাইরে। যখন চোরের দল,প্রতারকচক্র কারো অন্দরে প্রবেশের পরিকল্পনা করে তখন তারা ঘরের মানুষের
দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেয়।এইজন্য তারা খড়ের গাঁদায় আগুন দেয়।এই যে দেখুন,চোরের দল মায়ানমারে আগুন লাগিয়েছে; এটা হল
খড়ের গাঁদা। সবার দৃষ্টি ওই দিকে।আলোচনা, টকশো,জাতিসংঘ আর আমজনতার আড্ডার বিষয় হচ্ছে এটি।কিন্তু কেউই অন্দরমহল নিয়ে
যৌক্তিক আলোচনা করছে না।সবার দৃষ্টি যখন বাইরে থাকে তখন চোর চুরির কাজ সম্পন্ন
করে।আমি হলাম গিয়ে বেদরকারি শিক্ষক।কে শুনবে আমার কথা।এই মুহূর্তে সরকারকে সবচেয়ে
সতর্ক থাকতে হবে।একবার আমাদের খড়ের গাঁদায় আগুন লেগেছিল।সবাই ওইদিকে দৌঁড়ে
গেল।অনেকে ঘরর দরোজা খোলা রেখে গেল।এর ফাঁকে চোরের কাজ চোর করল।পরিবার কিংবা স্কুল
রাষ্ট্রের এক একটি ক্ষুদ্রতম রূপ। লোকটি দু'বছর
আগে এই রকম একটি কাহিনী শুনিয়ে ছিলেন। তার পর আমি একটা
সংকটে পড়েছিলাম।সেদিন তিনি বলেছিলেন,কয়েকটা জিনিশ বংশগত।
বলতে পারেন সেগুলো কী? আমাদের নবীন শিক্ষক রায়হান বলল,জানি স্যার।এটা হল:বিশ্বাস,সাহস আর তাগত।
অত:পর তিনি যুক্ত করলেন:কয়েকটি বিষয় অভ্যাসগত;এগুলো
হল:কর্মস্থলে যথা সময়ে উপস্থিত হওয়া,মিথ্যাকথা বলা,যৌনতা।
তিনি
বললেন, বিশ্বস্ত থাকার গুণ নাকি মানুষ সহজে অর্জন করতে পারেনা।।এইজন্য
মানুষের বংশ দেখে আমানত গচ্ছিত রাখা উচিত।নিচ বংশের মানুষের কাছে দেশের
আমানত গচ্ছিত রাখার ফল দেখুন।বর্তমানে জাতীয় শিক্ষাব্যয়ের সমান অর্থ ঋণ খেলাপিদের
হাতে। ব্যাংকের কর্তারা দেখেশুনে চোরদের হাতে মানুষের আমানত তুলে দিয়েছে।এই জন্য
ব্যাংকে চাকুরীপ্রার্থীরা চোর, বাটপারের ছেলে মেয়ে
কী না যাচাই বাচাই করা উচিত।এরা বড় পদ বা সুযোগ পেলে দেশও বিক্রি করে দেয়।এখনতো
তাই হচ্ছে।
চলবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন